আধুনিক জীবনে রেফ্রিজারেটর একটি অত্যাবশ্যক গৃহস্থালী যন্ত্র। বাংলাদেশে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর দীর্ঘদিন ধরে মানুষের আস্থার নাম। এই ব্র্যান্ডটি গুণগত মান এবং টেকসই কর্মক্ষমতার জন্য বিখ্যাত। তাছাড়া, সিঙ্গারের রেফ্রিজারেটর বিভিন্ন সাইজ ও ফিচারে পাওয়া যায়।
গৃহিণীদের কাছে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর অত্যন্ত জনপ্রিয়। কারণ এটি খাবার সংরক্ষণে চমৎকার কাজ করে। সেই সাথে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী। এছাড়াও, এর আকর্ষণীয় ডিজাইন যেকোনো ঘরকে সুন্দর করে তোলে।
বর্তমান বাজারে বিভিন্ন দামের সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর পাওয়া যায়। নতুন ক্রেতারা প্রায়ই সঠিক মডেল নির্বাচন নিয়ে দ্বিধায় পড়েন। তবে, সঠিক তথ্য জানলে সহজেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। আমাদের এই গাইড আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের দাম
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের দাম বিভিন্ন মডেল অনুযায়ী ভিন্ন হয়। বাংলাদেশে ছোট সাইজের মডেল ২৫,০০০ টাকা থেকে শুরু। অন্যদিকে, বড় সাইজের আধুনিক মডেলের দাম ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। মূলত, ক্যাপাসিটি এবং ফিচারের উপর দাম নির্ভর করে।
দাম নির্ধারণে কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, রেফ্রিজারেটরের সাইজ। দ্বিতীয়ত, এনার্জি রেটিং। তৃতীয়ত, অতিরিক্ত ফিচার। এছাড়াও, ব্র্যান্ডের খ্যাতি এবং ওয়ারেন্টি পিরিয়ডও দাম প্রভাবিত করে।
বাজেট অনুযায়ী বিভিন্ন অপশন রয়েছে। নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য বেসিক মডেল উপযুক্ত। মধ্যম আয়ের পরিবার মিড-রেঞ্জ মডেল বেছে নিতে পারে। উচ্চ আয়ের পরিবারের জন্য প্রিমিয়াম মডেল আছে। তবে, সবসময় প্রয়োজন অনুযায়ী কিনুন। অতিরিক্ত ফিচারের জন্য অযথা অর্থ ব্যয় করবেন না।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের সেরা মডেল

বর্তমানে বাজারে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের অনেক সেরা মডেল রয়েছে। Singer SRF-390DD একটি জনপ্রিয় ডবল ডোর মডেল। এটি ৩৯০ লিটার ক্যাপাসিটির এবং আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ। সেই সাথে, এর এনার্জি এফিশিয়েন্সি চমৎকার।
Singer SRF-280N আরেকটি চমৎকার মডেল। এটি নো-ফ্রস্ট টেকনোলজি সহ আসে। ফলে, ম্যানুয়াল ডি-ফ্রস্ট করার প্রয়োজন নেই। এছাড়াও, এর স্টোরেজ স্পেস বেশ ভালো। বড় পরিবারের জন্য এটি উপযুক্ত।
ছোট পরিবারের জন্য Singer SRF-170 আদর্শ। এটি কমপ্যাক্ট ডিজাইন এবং সাশ্রয়ী দামের। তবুও, প্রয়োজনীয় সব ফিচার রয়েছে। সেই সাথে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। একক ব্যক্তি বা দম্পতিদের জন্য পারফেক্ট।
নতুনত্বের জন্য Singer SRF-420INV বিবেচনা করুন। এটি ইনভার্টার টেকনোলজি সহ আসে। ফলে, বিদ্যুৎ বিল কম আসে। সেই সাথে, ভোল্টেজ ফ্লাকচুয়েশনের সময় নিরাপদ। আধুনিক পরিবারের জন্য দারুণ।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের বৈশিষ্ট্য
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের বৈশিষ্ট্য এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ। প্রথমেই আসে এর টেকসই কোয়ালিটি। সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর দীর্ঘদিন চলে। সাধারণত, ১০-১৫ বছর সমস্যা ছাড়া কাজ করে। এছাড়াও, এর পার্টস সহজলভ্য।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম অত্যন্ত উন্নত। খাবার সতেজ রাখতে এটি দুর্দান্ত কাজ করে। সবজি, ফল, মাছ-মাংস সবকিছু দীর্ঘদিন ভালো থাকে। সেই সাথে, ফ্রিজারের পারফরমেন্সও চমৎকার।
ডিজাইনের দিক থেকে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর আকর্ষণীয়। বিভিন্ন রঙ এবং সাইজে পাওয়া যায়। সাদা, কালো, স্টেইনলেস স্টিল রঙ জনপ্রিয়। এছাড়াও, আধুনিক মডেলগুলো স্মার্ট ফিচার সহ আসে। ডিজিটাল ডিসপ্লে, টেম্পারেচার কন্ট্রোল প্যানেল রয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে চাইল্ড লক সিস্টেম আছে। ভোল্টেজ সুরক্ষা এবং শর্ট সার্কিট প্রোটেকশন রয়েছে। ফলে, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এছাড়াও, বিদ্যুৎ চলে গেলে অটো স্টার্ট ফিচার কাজ করে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের রিভিউ
গ্রাহকদের রিভিউ অনুযায়ী সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর বেশ সন্তোষজনক। বেশিরভাগ ইউজার এর দীর্ঘস্থায়িত্ব নিয়ে খুশি। অনেকে ১০-১২ বছর ব্যবহার করেছেন সমস্যা ছাড়াই। সেই সাথে, রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কম। এটি একটি বড় সুবিধা।
কুলিং পারফরমেন্স নিয়ে পজিটিভ মন্তব্য বেশি। খাবার সংরক্ষণে এটি অত্যন্ত কার্যকর। ফ্রিজার সেকশন ভালো বরফ তৈরি করে। সবজি ও ফল তাজা রাখে দীর্ঘদিন। তবে, কিছু ইউজার শব্দের অভিযোগ করেছেন। পুরনো মডেলে এই সমস্যা বেশি।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে মিশ্র মতামত। নতুন ইনভার্টার মডেলগুলো কম বিদ্যুৎ খরচ করে। তবে, পুরনো মডেলের বিদ্যুৎ বিল বেশি। তাই, নতুন মডেল কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি সাশ্রয়ী।
অ্যাফটার সেল সার্ভিস নিয়ে সাধারণত ভালো মন্তব্য। সার্ভিস সেন্টার সহজলভ্য। টেকনিশিয়ানরা দক্ষ এবং সৎ। তবে, কিছু এলাকায় সার্ভিস পৌঁছাতে দেরি হয়। এটি উন্নতির দরকার।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কেনার গাইড
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করুন। প্রথমত, পরিবারের সদস্য সংখ্যা। দু’জনের পরিবারে ১৮০-২২০ লিটার যথেষ্ট। চার-পাঁচ জনের পরিবারে ৩০০-৪০০ লিটার প্রয়োজন। বড় পরিবারে ৫০০ লিটার বা বেশি লাগতে পারে।
দ্বিতীয়ত, রান্নাঘরের জায়গা মাপুন। রেফ্রিজারেটর বসানোর জন্য উপযুক্ত স্থান আছে কি না চেক করুন। সেই সাথে, দরজা খোলার জন্য অতিরিক্ত জায়গা রাখুন। ভেন্টিলেশনের জন্য পেছনে ও পাশে কিছু গ্যাপ রাখবেন।
তৃতীয়ত, বাজেট নির্ধারণ করুন। শুধু কেনার দাম নয়, চলমান খরচও হিসেব করুন। বিদ্যুৎ বিল, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ যোগ করুন। দীর্ঘমেয়াদি হিসেবে ইনভার্টার মডেল লাভজনক।
কোথায় কিনবেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। অথরাইজড ডিলার থেকে কিনুন। এতে ওয়ারেন্টি গ্যারান্টি পাবেন। অনলাইনে কিনলে রিভিউ দেখুন। হোম ডেলিভারি এবং ইনস্টলেশন সার্ভিস নিশ্চিত করুন।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের এনার্জি সেভিংস
আধুনিক সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে উন্নত এনার্জি সেভিং প্রযুক্তি রয়েছে। ইনভার্টার কম্প্রেসার প্রচলিত কম্প্রেসরের চেয়ে ৪০% কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এটি মোটর স্পিড অটোমেটিক নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে, অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ব্যয় হয় না।
এনার্জি স্টার রেটিং দেখে কিনুন। ৫ স্টার রেটেড মডেল সবচেয়ে সাশ্রয়ী। ১ স্টার রেটেড মডেল বেশি বিদ্যুৎ খায়। তাই, প্রাথমিক দাম একটু বেশি হলেও ৫ স্টার মডেল কিনুন। দীর্ঘমেয়াদে টাকা সাশ্রয় হবে।
LED লাইটিং আরেকটি সাশ্রয়ী ফিচার। ট্র্যাডিশনাল বাল্বের চেয়ে ৮০% কম বিদ্যুৎ খরচ করে। সেই সাথে, দীর্ঘস্থায়ী এবং উজ্জ্বল আলো দেয়। এছাড়াও, ভ্যাকুয়াম ইনসুলেশন প্যানেল তাপ সংরক্ষণে সাহায্য করে।
ব্যবহারের অভ্যাসও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্রভাব ফেলে। ঘন ঘন দরজা খুলবেন না। গরম খাবার ঠান্ডা করে রাখুন। নিয়মিত পরিষ্কার করুন। তাপমাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কমাবেন না। এসব ছোট বিষয় মেনে চললে বিদ্যুৎ বিল অনেক কমবে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ডিসকাউন্ট অফার
বছরের বিভিন্ন সময়ে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট অফার পাওয়া যায়। পহেলা বৈশাখ, ঈদের আগে বিশেষ ছাড় থাকে। দেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসেও অফার দেওয়া হয়। এসময় ১০-২৫% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়।
অনলাইন শপিং সাইটে মেগা সেল হয়। ১১.১১, ১২.১২ এর মতো দিনে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। ক্যাশব্যাক, ফ্রি ডেলিভারি, EMI সুবিধাও থাকে। তবে, সত্যিকারের ডিসকাউন্ট কি না তা যাচাই করুন। মূল দাম বাড়িয়ে ছাড় দেখানো হতে পারে।
ব্র্যান্ড এক্সচেঞ্জ অফারও জনপ্রিয়। পুরনো রেফ্রিজারেটর দিয়ে নতুন কিনলে অতিরিক্ত ছাড়। এটি বিশেষত পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ। পুরনো যন্ত্র সঠিক নিয়মে ধ্বংস করা হয়।
ব্যাংক অংশীদারিত্বে EMI সুবিধা পাওয়া যায়। ০% সুদে ৬-১২ মাসের কিস্তি। ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করলে অতিরিক্ত ছাড়। তবে, লুকানো খরচ আছে কিনা জেনে নিন। শর্তাবলী ভালো করে পড়ুন।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ওয়ারেন্টি
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে বিস্তৃত ওয়ারেন্টি সুবিধা দেওয়া হয়। সাধারণত ২ বছর সার্ভিস ওয়ারেন্টি এবং ৫ বছর কম্প্রেসর ওয়ারেন্টি। কিছু প্রিমিয়াম মডেলে ১০ বছর কম্প্রেসর ওয়ারেন্টি আছে। ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে বিনামূল্যে সার্ভিস পাওয়া যায়।
ওয়ারেন্টি কভারেজ বুঝে নিন। সাধারণত কম্প্রেসর, কন্ট্রোল সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত। তবে, গ্যাস চার্জিং, কসমেটিক ক্ষতি কভার নাও হতে পারে। দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতি সাধারণত অন্তর্ভুক্ত নয়।
ওয়ারেন্টি ক্লেইম করতে কাগজপত্র সংরক্ষণ করুন। ক্রয়ের রসিদ, ওয়ারেন্টি কার্ড রাখুন। ইনস্টলেশনের তারিখ নথিভুক্ত করান। প্রথম ১৫ দিনে কোনো সমস্যা হলে রিপ্লেসমেন্ট দাবি করতে পারেন।
এক্সটেন্ডেড ওয়ারেন্টি সুবিধাও আছে। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ওয়ারেন্টি বাড়ানো যায়। এটি দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা দেয়। তবে, খরচ-বেনিফিট বিশ্লেষণ করে নিন। সবসময় লাভজনক নাও হতে পারে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের নতুন মডেল
২০২৪ সালে সিঙ্গার বেশ কিছু উন্নত মডেল লঞ্চ করেছে। Singer SRF-550 Smart একটি বিশেষ আকর্ষণ। এতে Wi-Fi কানেক্টিভিটি রয়েছে। মোবাইল অ্যাপ থেকে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দূর থেকেই জানা যায় রেফ্রিজারেটরের অবস্থা।
Singer SRF-480 Eco Pro পরিবেশ বান্ধব মডেল। এতে R600a গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে। এই গ্যাস ওজোন স্তরের জন্য নিরাপদ। সেই সাথে, কুলিং এফিশিয়েন্সিও বেশি। এনার্জি কনজাম্পশন আগের মডেলের চেয়ে ৩০% কম।
Singer SRF-350 Glass Door এর ডিজাইন একদম নতুন। স্বচ্ছ কাচের দরজা দিয়ে ভেতরে দেখা যায়। LED লাইটিং স্ট্রিপ খাবার আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করে। রান্নাঘরের সৌন্দর্য বাড়ায় এই মডেল।
নতুন মডেলে মাল্টি-এয়ার ফ্লো সিস্টেম রয়েছে। এটি সমান তাপমাত্রা বজায় রাখে। কর্নারে রাখা খাবারও একই রকম ঠান্ডা হয়। ফ্রেশনেস গার্ড টেকনোলজি খাবারের পুষ্টিগুণ সংরক্ষণ করে। এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল কোটিং জীবাণু প্রতিরোধ করে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ফিচার
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে আধুনিক ফিচার প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটেছে। ডিজিটাল টেম্পারেচার কন্ট্রোল সিস্টেম নির্ভুল তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। LED ডিসপ্লেতে বর্তমান তাপমাত্রা দেখানো হয়। ইকো মোড অটোমেটিক এনার্জি সেভিং করে।
ট্রিপল কুলিং সিস্টেম দ্রুত কুলিং নিশ্চিত করে। এভেন কুল এয়ার ডিসট্রিবিউশন সব কোণে সমান ঠান্ডা রাখে। হিউমিডিটি কন্ট্রোল সিস্টেম সবজির তাজা রাখে। এন্টি-ফ্রস্ট টেকনোলজি বরফ জমতে দেয় না।
স্টোরেজ অপ্টিমাইজেশনে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। অ্যাডজাস্টেবল শেলফ বিভিন্ন সাইজের খাবার রাখার সুবিধা দেয়। বিগ বটল গার্ড বড় পানির বোতল রাখার জন্য। ভেজিটেবল ক্রিসপার সবজি তাজা রাখে দীর্ঘদিন।
নিরাপত্তা ফিচারে চাইল্ড লক সিস্টেম আছে। ভোল্টেজ প্রোটেকশন সিস্টেম বিদ্যুতের ওঠানামা থেকে রক্ষা করে। অটো স্টার্ট ফিচার বিদ্যুৎ ফিরলে নিজে নিজে চালু হয়। ডোর অ্যালার্ম দীর্ঘসময় দরজা খোলা থাকলে সতর্ক করে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজার ক্যাপাসিটি
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজার ক্যাপাসিটি বিভিন্ন মডেল অনুযায়ী ভিন্ন। ছোট মডেলে ৫০-৭০ লিটার ফ্রিজার স্পেস থাকে। মাঝারি মডেলে ১০০-১৫০ লিটার। বড় মডেলে ২০০ লিটার পর্যন্ত ফ্রিজার পাওয়া যায়। এটি পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচন করুন।
ফ্রিজার ডিজাইনে ব্যবহারিক সুবিধা বিবেচনা করা হয়েছে। মাল্টি-কম্পার্টমেন্ট সিস্টেম বিভিন্ন ধরনের খাবার আলাদা রাখার সুবিধা দেয়। আইস ট্রে, ফিশ রুম, মিট কম্পার্টমেন্ট আলাদা থাকে। এতে খাবারে গন্ধ মিশে যায় না।
দ্রুত ফ্রিজিং ফিচার জরুরি প্রয়োজনে কাজ করে। পাওয়ার ফ্রিজিং মোড খাবার তাড়াতাড়ি জমিয়ে দেয়। এটি বিশেষত মাছ-মাংস সংরক্ষণে উপকারী। সেই সাথে, ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।
ফ্রিজার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ আলাদাভাবে করা যায়। রেগুলার ফ্রিজিং থেকে ডিপ ফ্রিজিং পর্যন্ত। বরফ তৈরির জন্য সুপার ফ্রিজ মোড আছে। এছাড়াও, হলিডে মোড দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতিতে এনার্জি সেভ করে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের বিদ্যুৎ খরচ
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের বিদ্যুৎ খরচ মডেল অনুযায়ী ভিন্ন। পুরনো মডেলের মাসিক খরচ ১০০০-১৫০০ টাকা। নতুন ইনভার্টার মডেলের খরচ ৫০০-৮০০ টাকা। এনার্জি এফিশিয়েন্ট মডেল আরও কম বিদ্যুৎ খরচ করে।
বিদ্যুৎ খরচ নির্ধারণে কয়েকটি বিষয় প্রভাব ফেলে। রেফ্রিজারেটরের সাইজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বড় মডেল বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। তাপমাত্রা সেটিংও প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ঠান্ডা রাখলে বেশি বিদ্যুৎ লাগে।
পরিবেশগত কারণও বিদ্যুৎ খরচ বাড়ায়। গরম আবহাওয়ায় বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন। রান্নাঘরে হিট সোর্স কাছে থাকলে সমস্যা। সূর্যের আলো সরাসরি পড়লে কুলিং লোড বাড়ে।
খরচ কমানোর জন্য কিছু টিপস মেনে চলুন। দরজা ঘন ঘন খুলবেন না। গরম খাবার ঠান্ডা করে ভেতরে দিন। রেফ্রিজারেটর পূর্ণ রাখুন কিন্তু ঠাসাঠাসি না। নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কয়েল পরিষ্কার রাখলে দক্ষতা বাড়ে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ডিজাইন

সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের ডিজাইন আধুনিক এবং কার্যকর। স্লিম প্রোফাইল ডিজাইন জায়গা সাশ্রয় করে। স্টেইনলেস স্টিল ফিনিশিং আকর্ষণীয় চেহারা দেয়। ফিঙ্গারপ্রিন্ট রেজিস্টেন্ট কোটিং পরিষ্কার রাখা সহজ করে।
রঙের বৈচিত্র্য গ্রাহকদের পছন্দের সুযোগ দেয়। ক্লাসিক হোয়াইট সবচেয়ে জনপ্রিয়। সিলভার মেটালিক আধুনিক লুক দেয়। ব্ল্যাক স্টিল ইলেগ্যান্ট দেখায়। গ্র্যান্ড রেড এবং স্পার্কেল ব্লু তরুণদের পছন্দ।
হ্যান্ডেল ডিজাইন এরগোনমিক এবং মজবুত। রিসেসড হ্যান্ডেল স্পেস সেভিং। ইন্টিগ্রেটেড হ্যান্ডেল ক্লিন লুক দেয়। কিছু মডেলে পুশ-টু-ওপেন সিস্টেম আছে। এটি হ্যান্ডেল ছাড়াই খোলা যায়।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনেও সতর্কতা রয়েছে। ব্রাইট LED লাইটিং সব কোণ আলোকিত করে। গ্লাস শেলভ পরিষ্কার করা সহজ। স্পিল-প্রুফ শেলভ তরল ছড়িয়ে যেতে দেয় না। ডোর বিন্স বিভিন্ন সাইজের বোতল ধরে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের সার্ভিস সেন্টার
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের সার্ভিস নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী বিস্তৃত। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীতে প্রধান সার্ভিস সেন্টার। জেলা শহরগুলোতে অথরাইজড সার্ভিস পয়েন্ট রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মোবাইল সার্ভিস টিম পৌঁছায়।
সার্ভিস কোয়ালিটি সাধারণত সন্তোষজনক। ট্রেইনড টেকনিশিয়ান এবং অরিজিনাল পার্টস ব্যবহার করা হয়। কাস্টমার কেয়ার হটলাইন ২৪/৭ চালু। টেলিফোনে প্রাথমিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। প্রয়োজনে বাড়িতে টেকনিশিয়ান পাঠানো হয়।
সার্ভিস চার্জ মোটামুটি যুক্তিসঙ্গত। ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে বিনামূল্যে সার্ভিস। ওয়ারেন্টির বাইরে ভিজিট চার্জ ৫০০-৮০০ টাকা। পার্টস রিপ্লেসমেন্টের আলাদা খরচ। মেজর রিপেয়ারের আগে কোটেশন দেওয়া হয়।
অনলাইন সার্ভিস বুকিং সুবিধা চালু হয়েছে। ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া যায়। সার্ভিস রিকোয়েস্ট ট্র্যাক করার সিস্টেম আছে। কাস্টমার ফিডব্যাক নিয়মিত সংগ্রহ করা হয়।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের অনলাইন অর্ডার
অনলাইনে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর অর্ডার করা এখন সহজ। অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কেনা যায়। দারাজ, ভদানী, প্রিয়শপের মতো প্রতিষ্ঠিত সাইটে পাওয়া যায়। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম শপেও কিনতে পারেন।
অনলাইন অর্ডারে বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। ঘরে বসে বিভিন্ন মডেল তুলনা করতে পারেন। কাস্টমার রিভিউ পড়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অনলাইন পেমেন্ট, ক্যাশ অন ডেলিভারি দুটো সুবিধা আছে। EMI সুবিধাও পাওয়া যায়।
ডেলিভারি সিস্টেম বেশ উন্নত। ঢাকার ভেতর ২৪-৪৮ ঘন্টায় পৌঁছায়। জেলা শহরে ৩-৫ দিন লাগে। রিমোট এলাকায় ৭-১০ দিন সময় নিতে পারে। ডেলিভারি চার্জ এলাকা অনুযায়ী ভিন্ন। অনেক সময় ফ্রি ডেলিভারি অফার থাকে।
অর্ডার করার আগে কিছু বিষয় যাচাই করুন। সাইটটি অথরাইজড কিনা দেখুন। রিটার্ন পলিসি ভালো করে পড়ুন। ওয়ারেন্টি কার্ড পাবেন কিনা নিশ্চিত হন। ইনস্টলেশন সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত কিনা জেনে নিন। কাস্টমার সাপোর্ট যোগাযোগের তথ্য সংরক্ষণ করুন।
উপসংহার
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর বাংলাদেশে একটি নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বিভিন্ন মডেল, দাম এবং ফিচারের কারণে বিস্তৃত গ্রাহক এটি পছন্দ করেন। তবে, কেনার আগে নিজের প্রয়োজন এবং বাজেট বিবেচনা করা জরুরি।
আধুনিক প্রযুক্তি এবং এনার্জি এফিশিয়েন্সির দিক থেকে সিঙ্গার এগিয়ে। নতুন ইনভার্টার মডেলগুলো দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী। সেই সাথে, পরিবেশ বান্ধব। ওয়ারেন্টি এবং অ্যাফটার সেল সার্ভিসও সন্তোষজনক।
অনলাইন এবং অফলাইন দুভাবেই কেনার সুবিধা রয়েছে। তবে, অথরাইজড ডিলার থেকে কেনাই নিরাপদ। এতে আসল পণ্য এবং পূর্ণ ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী(FAQs)
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কত বছর চলে?
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর সাধারণত ১০-১৫ বছর চলে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করলে আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়। কম্প্রেসরের মান ভালো হওয়ায় দীর্ঘদিন সমস্যা হয় না।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরের সবচেয়ে সাশ্রয়ী মডেল কোনটি?
Singer SRF-170 সবচেয়ে সাশ্রয়ী মডেল। ছোট পরিবারের জন্য উপযুক্ত। দাম প্রায় ২৫,০০০-৩০,০০০ টাকার মধ্যে। প্রয়োজনীয় সব ফিচার রয়েছে।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কোথায় তৈরি হয়?
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর বাংলাদেশে তৈরি হয়। গাজীপুরে প্রধান ফ্যাক্টরি অবস্থিত। আন্তর্জাতিক মানের টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় উৎপাদনের ফলে দাম তুলনামূলক কম।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কি ভোল্টেজ ফ্লাকচুয়েশনে নিরাপদ?
হ্যাঁ, নতুন সিঙ্গার মডেলগুলো ভোল্টেজ ফ্লাকচুয়েশনে নিরাপদ। ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার বিল্ট-ইন আছে। ১৮০-২৪০ ভোল্টের মধ্যে নিরাপদে কাজ করে।
রেফ্রিজারেটর গ্যাস শেষ হলে কী করব?
গ্যাস শেষ হলে অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন। গ্যাস রিফিলিং ৩০০০-৫০০০ টাকা খরচ হতে পারে। তবে, লিকেজ আগে ঠিক করে নিন।
কোন সাইজের রেফ্রিজারেটর কিনব?
পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী নির্বাচন করুন। ২ জনের জন্য ১৮০ লিটার, ৪ জনের জন্য ৩০০ লিটার, ৬ জনের জন্য ৪৫০ লিটার যথেষ্ট। খাবারের ধরন এবং স্টক করার অভ্যাসও বিবেচনা করুন।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে নো ফ্রস্ট কী?
নো ফ্রস্ট মানে বরফ জমে না। ম্যানুয়াল ডি-ফ্রস্ট করার প্রয়োজন নেই। অটোমেটিক ডি-ফ্রস্ট সিস্টেম বরফ গলিয়ে দেয়। এতে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম।
ইনভার্টার রেফ্রিজারেটর কী?
ইনভার্টার রেফ্রিজারেটরে ভেরিয়েবল স্পিড কম্প্রেসার থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী স্পিড নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৪০% পর্যন্ত। শব্দও কম হয়।
রেফ্রিজারেটর কিনে কতদিন ওয়ারেন্টি পাব?
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটরে ২ বছর সার্ভিস ওয়ারেন্টি এবং ৫-১০ বছর কম্প্রেসর ওয়ারেন্টি পাবেন। কিছু প্রিমিয়াম মডেলে এক্সটেন্ডেড ওয়ারেন্টি আছে।
কিস্তিতে কিনতে পারব?
হ্যাঁ, বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে EMI সুবিধা আছে। ০% সুদে ৬-১২ মাসের কিস্তি। কিছু অনলাইন সাইটে নিজস্ব EMI সুবিধাও রয়েছে।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍