মেঘলা আকাশ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আর বারান্দায় বসে চা খাওয়ার মজা। বৃষ্টির দিনে রান্নার মেনু নিয়ে ভাবনায় পড়েন না? এমন আবহাওয়ায় সবার মন চায় কিছু গরম আর মজাদার খাবার। বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে পরিবারের সবাই মিলে বসে সুস্বাদু খাবার খেতে কে না ভালোবাসে?
বৃষ্টির দিনে আমাদের খাবারের রুচি একটু অন্যরকম হয়। সাধারণত এই সময় গরম চা, কফি আর কিছু ভাজাপোড়া খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। কিন্তু প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খেতে ভালো লাগে না। তাই প্রয়োজন নতুনত্বের। আজকের এই লেখায় আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব বৃষ্টির দিনে রান্নার মেনু এর বিস্তারিত তালিকা।
বৃষ্টির দিনে সহজ রেসিপি

বৃষ্টির দিনে রান্নাঘরে বেশি সময় কাটাতে ভালো লাগে। তবে অনেকেই জটিল রেসিপি এড়িয়ে চলেন। এমন পরিস্থিতিতে সহজ রেসিপিগুলো বেশ কাজে আসে। ১৫-২০ মিনিটেই তৈরি হয়ে যায় এমন খাবার সবার পছন্দ।
বৃষ্টির দিনে সহজ রেসিপি হিসেবে আলুর পরোটা অসাধারণ। মাত্র কয়েকটি উপাদান দিয়েই বানানো যায়। আটা, সেদ্ধ আলু, পেঁয়াজ কুচি আর মসলা মিশিয়ে নিন। তারপর পরোটার মতো বেলে নিয়ে তাওয়ায় সেঁকে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন।
ডিম ভাজিও একটি সহজ বিকল্প। অল্প তেলে পেঁয়াজ কুচি ভেজে নিন। তার সাথে ডিম ভেঙে দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে স্বাদ বাড়ান। ৫ মিনিটেই প্রস্তুত।
নুডলসও চট্টজলদি রান্না হয়। সবজি আর ডিম দিয়ে নুডলস রান্না করলে পুষ্টিকর হয়। বৃষ্টির দিনে এমন গরম খাবার সবাই পছন্দ করেন।
ঝালমুড়ি বানানোর পদ্ধতি
বৃষ্টি মানেই ঝালমুড়ি! এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি বাঙালির কাছে অতি প্রিয়। ঝালমুড়ি বানানোর পদ্ধতি একদমই সহজ। তবে স্বাদের জন্য উপাদানগুলো ঠিকমতো মেশাতে হয়।
মুড়ি, চানাচুর, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, শসা কুচি এবং ধনেপাতা নিন। আলাদা পাত্রে সরিষার তেল, লবণ, লেবুর রস আর কাঁচামরিচ বাটা মিশিয়ে নিন। এবার সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিন।
ঝালমুড়িতে বৈচিত্র্য আনতে পারেন বিভিন্নভাবে। কেউ কেউ আলুসেদ্ধ দেন। আবার কেউ ডালমুট মেশান। ফুচকার পানি দিলে স্বাদ আরও বেড়ে যায়। তবে একসাথে বেশি বানাবেন না। ঝালমুড়ি বেশিক্ষণ রাখলে মুড়ি নরম হয়ে যায়।
ঘরে তৈরি ঝালমুড়ির স্বাদ দোকানের চেয়ে অনেক ভালো। পরিবারের সবার পছন্দ অনুযায়ী মসলা কম-বেশি করতে পারেন। বৃষ্টির সন্ধ্যায় পরিবার নিয়ে বসে ঝালমুড়ি খাওয়ার আনন্দই আলাদা।
চা ও পকোড়ার রেসিপি
বৃষ্টির দিনে চা আর পকোড়া ছাড়া কী আর হতে পারে! এই কম্বিনেশন বাঙালির হৃদয়ে চিরকাল থাকবে। চা ও পকোড়ার রেসিপি সবারই জানা। তবু আরেকবার মনে করিয়ে দিই।
প্রথমে পকোড়ার জন্য বেসন, হলুদ, লবণ আর পানি মিশিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। বেগুন, আলু, পেঁয়াজের পাতলা টুকরো করে কেটে নিন। গরম তেলে ডুবিয়ে ভেজে নিন। সোনালি রং হলে তুলে নিন।
চা বানানোর জন্য পানিতে চা পাতা, আদা কুচি আর এলাচ দিন। ফুটে উঠলে দুধ ঢালুন। চিনি দিয়ে মিষ্টি করে নিন। ছেঁকে পরিবেশন করুন। গরম গরম চা আর কুড়কুড়ে পকোড়ার স্বাদ অতুলনীয়।
পকোড়ায় বৈচিত্র্য আনতে পালংশাক, ফুলকপি কিংবা মাছের টুকরোও ব্যবহার করতে পারেন। মসলা হিসেবে জিরা গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া দিলে স্বাদ বেড়ে যায়। শুধু খেয়াল রাখবেন তেল যেন খুব বেশি গরম না হয়।
বৃষ্টির দিনে গরম খাবার
ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীর গরম রাখতে গরম খাবারের প্রয়োজন। বৃষ্টির দিনে গরম খাবার খেলে মন ভালো থাকে। পেটও ভরে থাকে দীর্ঘ সময়।
খিচুড়ি এমন একটি খাবার যা পুষ্টিকর এবং হজমেও সহায়ক। চাল, ডাল, সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করুন। ঘি আর গরম মসলা দিলে স্বাদ আরও ভালো হয়। পাশে আচার আর পাপড় থাকলে তো কথাই নেই।
গরম স্যুপও বেশ উপকারী। টমেটো স্যুপ, মুরগির স্যুপ কিংবা সবজির স্যুপ যেকোনো একটি বানাতে পারেন। অল্প নুন আর গোলমরিচ দিয়ে স্বাদ ঠিক করে নিন। গরম গরম খেলে শরীর চাঙা থাকে।
হালিমও দুর্দান্ত একটি গরম খাবার। বিভিন্ন ডাল আর মাংস দিয়ে ধীরে ধীরে রান্না করতে হয়। লেবু আর কাঁচামরিচ দিয়ে পরিবেশন করুন। পেট ভরে খেতে পারবেন।
মুড়ি চা কম্বিনেশন
বাঙালির সন্ধ্যার নাস্তায় মুড়ি চা কম্বিনেশন একটি জনপ্রিয় পছন্দ। সহজ, সস্তা আর মজাদার। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
মুড়ি খেতে অনেকভাবে পারেন। কেউ শুকনা মুড়িতে চিনি মিশিয়ে খান। আবার কেউ নুন, মরিচের গুঁড়া দেন। পেঁয়াজ কুচি আর সরিষার তেল দিলেও ভালো লাগে। একেকজনের একেকরকম পছন্দ।
চায়ের সাথে মুড়ি খেলে পেট ভরে যায়। পুষ্টিকর নাস্তাও হয়। তবে বেশি খাবেন না। মুড়ি হজম হতে সময় নেয়। অল্প অল্প করে খেতে থাকুন চায়ের সাথে।
মুড়ি ভাজাও খেতে পারেন। কড়াইয়ে অল্প তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি ভাজুন। তার সাথে মুড়ি দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। হলুদ গুঁড়া আর লবণ দিয়ে নামিয়ে নিন। গরম গরম খেতে বেশ লাগবে।
বৃষ্টির দিনে ঝাল খাবার
বৃষ্টির দিনে ঝাল খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। মসলাদার খাবার খেলে শরীর গরম থাকে। সর্দি-কাশির সমস্যাও কম হয়।
চিলি চিকেন একটি জনপ্রিয় ঝাল খাবার। মুরগির মাংস টুকরো করে কেটে মসলা মাখিয়ে রাখুন। তারপর কড়াইয়ে তেল গরম করে ভেজে নিন। পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। সস দিয়ে স্বাদ বাড়ান।
ঝাল মুড়িও দারুণ লাগে। বিরিয়ানি বা পোলাওয়ের সাথে খেতে পারেন। মুরগির কলিজা দিয়েও ভালো ঝাল তরকারি হয়। কাঁচামরিচ আর গরম মসলা বেশি দিতে হবে।
ডিমের কারি বানিয়েও খেতে পারেন। ডিম সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। পেঁয়াজ রসুন বেটে ভাজুন। টমেটো দিয়ে ঝোল করে ডিম দিয়ে দিন। ঝাল মসলা দিয়ে রান্না সম্পন্ন করুন।
ভাজাপোড়া খাবারের তালিকা

বৃষ্টির দিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ভাজাপোড়া। তেলে ভাজা খাবার খেতে সবাই ভালোবাসেন। তবে পরিমাণ মতো খেতে হবে।
সিঙাড়া বাঙালির প্রিয় ভাজা খাবার। ময়দার খোলায় মশলা দিয়ে মাখানো আলুর পুর ভরে তেলে ভাজতে হয়। কুড়কুড়ে সিঙাড়ার সাথে চা খেতে খুবই ভালো লাগে।
বেগুনি বানাতে বেগুন পাতলা করে কেটে নিন। বেসনের ব্যাটারে ডুবিয়ে গরম তেলে ভাজুন। বেগুন নরম হলে তুলে নিন। লবণ ছিটিয়ে গরম গরম খান।
পিয়াজু বানানোর জন্য ডাল ভিজিয়ে রাখুন। বেটে নিয়ে পেঁয়াজ কুচি মিশান। গোল গোল করে তেলে ভেজে নিন। কাঁচামরিচ দিয়ে খেতে পারেন। স্বাদ অসাধারণ লাগবে।
ঘরোয়া হালকা খাবার
সবসময় ভারী খাবার খেতে ভালো লাগে না। কখনো কখনো হালকা কিছু খেতে ইচ্ছে করে। ঘরোয়া হালকা খাবারও সুস্বাদু হতে পারে।
দই চিড়া একটি পুষ্টিকর হালকা খাবার। চিড়া ভিজিয়ে নিয়ে দই মিশান। চিনি দিয়ে মিষ্টি করুন। কলা কেটে দিলে স্বাদ আরও বাড়বে। এই খাবার সকালের নাস্তায় খেতে পারেন।
সালাদও হালকা খাবারের মধ্যে পড়ে। শসা, গাজর, বাঁধাকপি কুচিয়ে নিন। লেবুর রস, লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিন। পুদিনা পাতা দিলে সতেজ লাগবে।
ফলের সালাদ বানাতে কলা, আপেল, আঙুর কেটে নিন। চাট মসলা আর লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে খান। হজমও ভালো হয় আর স্বাস্থ্যকরও।
বৃষ্টির দিনে পরিবারের মেনু
পুরো পরিবারের জন্য মেনু করতে গেলে সবার পছন্দের কথা ভাবতে হয়। বৃষ্টির দিনে পরিবারের মেনু এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ছোট-বড় সবার মন ভরে।
সকালের নাস্তায় পরোটা, ডিম ভাজি আর চা রাখতে পারেন। দুপুরে ভাত, মাছের ঝোল, সবজি আর ডাল থাকলে ভালো। বিকেলে ঝালমুড়ি বা পকোড়া দিয়ে চা খেতে পারেন।
রাতের খাবারে খিচুড়ি রাখলে সবাই খুশি হবে। সাথে ইলিশ ভাজা কিংবা মাংসের তরকারি থাকলে আরও ভালো। আচার আর পাপড় দিয়ে খিচুড়ি খেতে মজা লাগে।
মিষ্টি হিসেবে রসগোল্লা বা পায়েস রাখতে পারেন। বৃষ্টির দিনে পরিবার নিয়ে বসে এসব খাবার খাওয়ার আনন্দই আলাদা। সবাই মিলে রান্না করলে আরও মজা লাগে।
বৃষ্টির সময় সেরা খাবার
বৃষ্টির সময় সেরা খাবার কী? এ প্রশ্নের উত্তর একেকজনের কাছে একেকরকম। তবে কিছু খাবার আছে যা সবার পছন্দের তালিকায় থাকে।
কাচ্চি বিরিয়ানি বৃষ্টির দিনের জন্য আদর্শ খাবার। গরম ভাত, মাংস আর মসলার মিশ্রণে তৈরি এই খাবার খেতে সবাই ভালোবাসেন। দোকান থেকে কিনেও আনতে পারেন।
হট চকলেটও বৃষ্টির দিনের দারুণ পানীয়। দুধের সাথে চকলেট মিশিয়ে গরম করে নিন। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এর স্বাদ অতুলনীয়।
গরম সুজির হালুয়াও খেতে পারেন। ঘি, চিনি আর বাদাম দিয়ে বানান। বৃষ্টির সন্ধ্যায় পরিবার নিয়ে বসে খেতে দারুণ লাগবে।
গরম চা ও ভাজাপোড়া
গরম চা ও ভাজাপোড়া বৃষ্টির দিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই কম্বিনেশনটি বাঙালি সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে জড়িত।
চা বানানোর সময় লক্ষ রাখুন যেন খুব বেশি মিষ্টি না হয়। আদা আর এলাচ দিলে স্বাদ বৃদ্ধি পায়। লেবু চা বানিয়েও খেতে পারেন। শহদ দিলে প্রাকৃতিক মিষ্টতা পাবেন।
ভাজাপোড়ার মধ্যে আলুর চিপস বানাতে পারেন। আলু পাতলা করে কেটে নুন মাখিয়ে রাখুন। তারপর তেলে ভেজে নিন। কুড়কুড়ে চিপস তৈরি হবে। এর সাথে চা খেতে দারুণ লাগে।
চিকেন রোল বানিয়েও খেতে পারেন। পরোটার মধ্যে চিকেন ভর্তা আর সবজি দিয়ে রোল করুন। মজাদার স্ন্যাক্স তৈরি হয়ে যাবে।
নাস্তার জন্য সহজ রান্না
নাস্তার জন্য এমন খাবার বানান যা তাড়াতাড়ি তৈরি হয়। নাস্তার জন্য সহজ রান্নার অনেক অপশন রয়েছে।
টোস্ট একটি সহজ নাস্তা। ব্রেডের ওপর মাখন লাগিয়ে তাওয়ায় সেঁকে নিন। জ্যাম বা পনির দিয়ে খেতে পারেন। চায়ের সাথে টোস্ট খেতে ভালো লাগে।
সেভাইয়া বানানো খুবই সহজ। দুধে চিনি দিয়ে ফুটান। তার মধ্যে সেভাইয়া দিয়ে রান্না করুন। বাদাম আর কিশমিশ দিলে স্বাদ বেড়ে যায়।
ওটস বানিয়েও খেতে পারেন। দুধে ওটস সিদ্ধ করে ফল দিয়ে খান। স্বাস্থ্যকর আর পুষ্টিকর নাস্তা হবে। মধু দিলে প্রাকৃতিক মিষ্টতা পাবেন।
বৃষ্টির দিনে ঝালমিষ্টি খাবার
বৃষ্টির দিনে কখনো ঝাল, কখনো মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে। বৃষ্টির দিনে ঝালমিষ্টি খাবারের চাহিদা বিশেষভাবে বেড়ে যায়।
চাট একটি জনপ্রিয় ঝালমিষ্টি খাবার। আলুসেদ্ধ, ছোলা, পেঁয়াজ কুচি মিশিয়ে নিন। টক, ঝাল আর মিষ্টি চাটনি দিয়ে মিশিয়ে খান। ভেলপুরি বানিয়েও খেতে পারেন।
দইবড়া বানানতে ডালের বড়া তৈরি করুন। তক্ত দইয়ে ডুবিয়ে রাখুন। টক-মিষ্টি স্বাদের জন্য চিনি আর লবণ দিন। তেঁতুলের জল দিলে আরও মজা লাগবে।
ফুচকাও দারুণ ঝালমিষ্টি খাবার। তবে বৃষ্টির দিনে ঘরে তৈরি করা ভালো। পুরির মধ্যে মশলা দিয়ে মাখানো আলু ভরুন। তেঁতুলের জল দিয়ে খান।
বিকেলের জন্য দ্রুত রেসিপি
বিকেলের নাস্তার সময় বেশি রান্না করতে ইচ্ছে করে না। বিকেলের জন্য দ্রুত রেসিপি জানা থাকলে কাজে আসে।
মাগি নুডলস খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়। সবজি আর ডিম দিয়ে বানালে পুষ্টিকর হয়। বিকেলের ক্ষুধা মেটাতে এর চেয়ে ভালো কিছু নেই।
সুজি উপমা বানাতে সুজি ভেজে নিন। পেঁয়াজ, মরিচ দিয়ে ছাড়ুন। গরম পানি দিয়ে রান্না করুন। দ্রুত তৈরি হয়ে যাবে। নারিকেল কোরানো দিলে স্বাদ বাড়ে।
ফ্রুট চাটও বানাতে পারেন। আপেল, কলা, পেয়ারা কেটে চাট মসলা দিন। লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে খান। রিফ্রেশিং এবং স্বাস্থ্যকর।
মৌসুমি খাবারের আইডিয়া
প্রতিটি মৌসুমেই বিশেষ কিছু খাবারের চল থাকে। বর্ষায় মৌসুমি খাবারের আইডিয়া নিয়ে রান্না করলে বেশি আনন্দ পাবেন।
কাঁঠালের তরকারি বর্ষাকালের জনপ্রিয় খাবার। কচি কাঁঠাল দিয়ে নিরামিষ তরকারি বানান। আলু দিয়ে রান্না করলে স্বাদ ভালো হয়। এর সাথে ভাত খেতে দারুণ লাগে।
শিম, বরবটি এসব সবজিও বর্ষায় ভালো পাওয়া যায়। নানারকম সবজির ঝোল বানান। ডাল দিয়ে রান্না করলে পুষ্টিকর হয়।
আমসত্ত্ব দিয়ে টক-ঝাল তরকারি বানাতে পারেন। মাছ কিংবা মাংসের সাথে আমসত্ত্ব দিয়ে রান্না করলে অসাধারণ স্বাদ পাবেন। বর্ষাকালে এসব খাবার খেতে বিশেষ ভালো লাগে।
উপসংহার
বৃষ্টির দিনে রান্নার মেনু সাজানো আসলে খুবই আনন্দের কাজ। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে খাবারের পছন্দও বদলে যায়। গরম চা থেকে শুরু করে ভাজাপোড়া, ঝালমুড়ি থেকে খিচুড়ি – সব খাবারেরই আলাদা মজা রয়েছে।
এই লেখায় যেসব রেসিপি শেয়ার করেছি, সবগুলোই সহজ এবং বাড়িতে সহজেই বানানো যায়। পরিবারের সবার পছন্দের কথা মাথায় রেখে মেনু সাজালে সবাই খুশি থাকবেন। বৃষ্টির দিনে এসব খাবার খেতে খেতে পরিবারের সাথে আড্দা দিন। রান্নার কাজেও সবাইকে সাহায্য করতে বলুন।
মনে রাখবেন, খাবার শুধু পেট ভরানোর জন্য নয়। এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। বৃষ্টির দিনের খাবারগুলো আমাদের ছেলেবেলার স্মৃতির সাথে জড়িত। তাই এসব খাবার বানানো আর খাওয়ার সময় সেই আনন্দটুকু উপভোগ করুন।
বৃষ্টির দিনে রান্নার মেনু নিয়ে আর চিন্তা নেই। এই তালিকা থেকে যেকোনো খাবার বেছে নিন। স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু আর পুষ্টিকর খাবার খান। পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটান।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
বৃষ্টির দিনে কোন খাবারগুলো সবচেয়ে জনপ্রিয়?
বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ঝালমুড়ি, চা-পকোড়া, খিচুড়ি এবং বিভিন্ন ভাজাপোড়া। এসব খাবার গরম এবং মজাদার হওয়ায় ঠান্ডা আবহাওয়ায় বিশেষ উপকারী। বাঙালি সংস্কৃতিতে এগুলো বর্ষাকালের ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পরিচিত।
বৃষ্টির দিনে ঝালমুড়ি বানানোর সহজ উপায় কী?
ঝালমুড়ি বানাতে মুড়ি, চানাচুর, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি নিন। আলাদা পাত্রে সরিষার তেল, লবণ, লেবুর রস মিশান। সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। ১০ মিনিটেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু ঝালমুড়ি।
বৃষ্টির দিনে কী ধরনের গরম পানীয় ভালো?
বৃষ্টির দিনে গরম চা, কফি, হট চকলেট এবং আদা চা বেশ উপকারী। লেবু চা এবং মসলা চাও খেতে পারেন। এসব পানীয় শরীর গরম রাখে এবং সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বৃষ্টির দিনে পরিবারের সবার জন্য কী রান্না করা ভালো?
পরিবারের সবার জন্য খিচুড়ি আদর্শ। এর সাথে পকোড়া, আচার রাখতে পারেন। বিকেলে ঝালমুড়ি বা চা-বিস্কুট দিতে পারেন। সকালে পরোটা-ডিম ভাজা ভালো অপশন। এতে ছোট-বড় সবার পছন্দ মিটবে।
বর্ষাকালে কোন সবজি দিয়ে তরকারি রান্না করা ভালো?
বর্ষাকালে কাঁঠাল, শিম, বরবটি, পটোল, ঝিঙে এসব সবজি ভালো। এগুলো দিয়ে নানারকম তরকারি বানাতে পারেন। আলু আর বেগুন সারা বছর পাওয়া যায়। মৌসুমি সবজি দিয়ে রান্না করলে স্বাদ বেশি পাবেন।
বৃষ্টির দিনে তেলে ভাজা খাবার খাওয়া কী স্বাস্থ্যকর?
পরিমাণমতো খেলে ক্ষতি নেই। তবে বেশি ভাজাপোড়া খাবেন না। সপ্তাহে ২-৩ দিন খেতে পারেন। ভাজার সময় ভালো তেল ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত তেল ঝরিয়ে নিয়ে খান। সাথে সালাদ রাখলে ভালো।
বৃষ্টির দিনে দ্রুত নাস্তা বানানোর সহজ উপায়?
টোস্ট, মাগি নুডলস, সুজি উপমা দ্রুত তৈরি হয়। ডিম ভাজা বা সিদ্ধও ১০ মিনিটে হয়ে যায়। দই-চিড়া একদম তাড়াতাড়ি বানানো যায়। ফল কেটে চাট মসলা দিয়েও খেতে পারেন।
বৃষ্টির দিনে কোন মিষ্টি খাবার ভালো?
পায়েস, ক্ষীর, সুজির হালুয়া বৃষ্টির দিনে ভালো। রসগোল্লা, সন্দেশও খেতে পারেন। ঘরে তৈরি খির কদমা বা গুড়ের পায়েসও মজাদার। গরম মিষ্টি খেতে বিশেষ ভালো লাগে।
বৃষ্টির দিনে খাবার সংরক্ষণের উপায় কী?
বৃষ্টির দিনে খাবার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়। ঢেকে রাখুন এবং ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করুন। রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখুন। ভাজাপোড়া বাতাস নিরোধক পাত্রে রাখলে কুড়কুড়ে থাকে। তরকারি ভালো করে ঢেকে রাখুন।
বৃষ্টির দিনে কোন খাবার এড়িয়ে চলা ভালো?
বাইরের কাটা ফল, ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। বেশি মশলা দেওয়া খাবার কম খান। পচা বা বাসি খাবার একদম খাবেন না। রাস্তার পাশের খোলা খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍