বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত গার্মেন্টস শিল্প। লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস এই খাত। অতএব, গার্মেন্টসে চাকরি খোঁজা মানুষদের জন্য এক বিশাল সুযোগের ক্ষেত্র। তবে, এই সুযোগ কাজে লাগাতে প্রয়োজন সঠিক তথ্য এবং পরিকল্পনা।
আজকের যুগে গার্মেন্টস শিল্প শুধুমাত্র সেলাই কাজেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং, এখানে রয়েছে বহুমুখী পেশার সুযোগ। ডিজাইন থেকে শুরু করে ম্যানেজমেন্ট পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই কাজের সুযোগ বিদ্যমান। ফলস্বরূপ, বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
গার্মেন্টসে চাকরির যোগ্যতা

গার্মেন্টসে চাকরির যোগ্যতা বিভিন্ন পদের জন্য আলাদা হয়ে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক পদের জন্য মাধ্যমিক পাস হলেই চলে। তবে, উন্নত পদগুলোর জন্য স্নাতক বা বিশেষায়িত ডিগ্রি প্রয়োজন।
অপারেটর পদের জন্য সাধারণত অষ্টম শ্রেণি থেকে এসএসসি পাস হলেই যথেষ্ট। অন্যদিকে, সুপারভাইজার বা কোয়ালিটি কন্ট্রোলার পদের জন্য এইচএসসি বা ডিপ্লোমা প্রয়োজন। এছাড়াও, ইঞ্জিনিয়ারিং বা ম্যানেজমেন্ট পদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি আবশ্যক।
বয়সের ক্ষেত্রে সাধারণত ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে থাকতে হয়। তবে, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই সীমা শিথিল করা হয়। অতএব, অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
গার্মেন্টসে চাকরির সুযোগ
বর্তমানে গার্মেন্টসে চাকরির সুযোগ ব্যাপক। দেশে প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। এই সব কারখানায় নিয়মিত নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশেষত, নতুন কারখানা স্থাপনের সাথে সাথে চাকরির সুযোগ বাড়ছে।
উৎপাদন বিভাগে সবচেয়ে বেশি চাকরির সুযোগ রয়েছে। অপারেটর, হেল্পার, কাটিং মাস্টার, ফিনিশিং সুপারভাইজার এই বিভাগের প্রধান পদগুলো। উপরন্তু, কোয়ালিটি কন্ট্রোল বিভাগেও প্রচুর লোকবল প্রয়োজন।
প্রশাসনিক বিভাগে অ্যাকাউন্টিং, এইচআর, মার্চেন্ডাইজিং এর কাজ রয়েছে। এছাড়া, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে। সুতরাং, বিভিন্ন দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা এখানে কাজের সুযোগ পাবেন।
গার্মেন্টসে চাকরি করার নিয়ম
গার্মেন্টসে চাকরি করার নিয়ম সহজ এবং স্বচ্ছ। প্রথমত, কারখানার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করতে হয়। সাধারণত দৈনিক পত্রিকা এবং কারখানার গেটে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি। তদুপরি, অভিজ্ঞতার সনদপত্র থাকলে তা জমা দিতে হয়।
লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ নেওয়া হয় নির্বাচিত প্রার্থীদের। উত্তীর্ণ হলে ট্রেনিং দেওয়া হয় নতুন কর্মীদের। এর পর চূড়ান্ত নিয়োগ প্রদান করা হয়। অবশেষে, কাজে যোগদানের পর শিক্ষানবিশকাল অতিক্রম করতে হয়।
গার্মেন্টসে চাকরির বেতন
গার্মেন্টসে চাকরির বেতন পদভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি অনুসারে বেতন দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রবেশ পর্যায়ের কর্মীদের বেতন ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু।
অপারেটর পদে সাধারণত ৮-১৫ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায়। সুপারভাইজার পদে ১৫-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়। অভিজ্ঞতার সাথে বেতন বৃদ্ধি পায় নিয়মিত।
ম্যানেজমেন্ট পদে বেতন আরও বেশি হয়ে থাকে। সহকারী ম্যানেজার পদে ২৫-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। তাছাড়া, বোনাস এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায় কোম্পানি অনুসারে। ফলে, মোট আয় বেতনের চেয়ে বেশি হয়।
গার্মেন্টসে চাকরির বিজ্ঞপ্তি
গার্মেন্টসে চাকরির বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। দৈনিক পত্রিকার চাকরির বিভাগে নিয়মিত এই বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, ইনকিলাব পত্রিকায় বেশি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
অনলাইনেও চাকরির বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়। বিডিজবস, চাকরি.কম, প্রথম আলো জবস এই ওয়েবসাইটগুলোতে নিয়মিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এছাড়া কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়।
কারখানার গেটে সরাসরি বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষত জরুরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সেজন্য, নিয়মিত কারখানার গেট চেক করা উচিত চাকরিপ্রার্থীদের।
গার্মেন্টসে চাকরির শর্ত
গার্মেন্টসে চাকরির শর্ত সাধারণত সহজ এবং যৌক্তিক। প্রার্থীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হয়। কারণ, কারখানার কাজে পরিশ্রম এবং মনোযোগের প্রয়োজন।
কাজের সময় মেনে চলতে হয় কঠোরভাবে। সাধারণত দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। ওভারটাইম করার ইচ্ছা থাকতে হয় প্রয়োজন অনুসারে। নিয়মানুবর্তিতা এবং দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারখানার নীতিমালা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে পোশাক, আচরণ এবং কাজের নিয়ম। তদ্ব্যতীত, দলগত কাজে অভ্যস্ত হতে হয়। একা কাজ করার চেয়ে দলীয়ভাবে কাজ করার প্রবণতা বেশি।
গার্মেন্টসে চাকরি কিভাবে পাবো
গার্মেন্টসে চাকরি কিভাবে পাবো এই প্রশ্নটি অনেকের মনে থাকে। প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক তথ্য সংগ্রহ। নিয়মিত পত্রিকা পড়া এবং অনলাইন জব পোর্টাল চেক করা উচিত।
দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে। বিআইটিএসি, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নিলে চাকরি পেতে সুবিধা হয়। এই প্রশিক্ষণ সনদপত্র চাকরির আবেদনে বিশেষ গুরুত্ব পায়।
নেটওয়ার্কিং করা গুরুত্বপূর্ণ। গার্মেন্টসে কাজ করা বন্ধু-আত্মীয়দের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অনেক সময় তাদের রেফারেন্সে চাকরি পাওয়া সহজ হয়। অবশেষে, ধৈর্য রেখে নিয়মিত চেষ্টা করতে হয়।
গার্মেন্টসে চাকরির চাহিদা
বর্তমান সময়ে গার্মেন্টসে চাকরির চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। রপ্তানি আদেশ বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মীর প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি গার্মেন্টসের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশেষ করে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বেশি। মেশিন অপারেটর, প্যাটার্ন মেকার, কাটিং মাস্টারের চাহিদা সবসময় রয়েছে। নতুন টেকনোলজি ব্যবহারের কারণে টেকনিক্যাল পদেও চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহিলা কর্মীদের চাহিদা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেলাই কাজে মহিলারা অধিক দক্ষ বলে বিবেচিত। এছাড়া, কোয়ালিটি কন্ট্রোলের কাজেও মহিলাদের অংশগ্রহণ বেশি। অতএব, মহিলাদের জন্য এই খাতে ভাল সুযোগ রয়েছে।
গার্মেন্টসে চাকরির ভবিষ্যৎ

গার্মেন্টসে চাকরির ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। সরকারের নীতি সহায়তা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে এই খাতের সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে। নতুন বাজার সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তির উন্নতির সাথে কাজের ধরনও পরিবর্তিত হচ্ছে। অটোমেশন আসলেও দক্ষ কর্মীর চাহিদা কমবে না। বরং, নতুন ধরনের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীদের চাহিদা বাড়বে।
পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং টেকসই উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে নতুন বিভাগ এবং পদ সৃষ্টি হবে। এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স, সাস্টেইনেবিলিটি ম্যানেজমেন্ট এই ক্ষেত্রগুলোতে কাজের সুযোগ বাড়বে।
গার্মেন্টসে চাকরির সুবিধা অসুবিধা
গার্মেন্টসে চাকরির সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করা প্রয়োজন। সুবিধার মধ্যে রয়েছে নিয়মিত চাকরির সুযোগ এবং স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা। ওভারটাইমের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করা যায়।
অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে। নতুন দক্ষতা শেখার সুযোগ পাওয়া যায়। তবে, কাজের চাপ বেশি থাকে অনেক সময়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়।
পরিবেশগত কিছু সমস্যা রয়েছে। ধুলা, শব্দ এবং রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ আসতে হয়। তথাপি, আধুনিক কারখানাগুলোতে এই সমস্যা কমে আসছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে ক্রমান্বয়ে।
গার্মেন্টসে চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া
গার্মেন্টসে চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া সাধারণত সহজ। প্রথমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা যাচাই করতে হয়। তারপর নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হয় সঠিকভাবে।
আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র। রঙিন ছবিও প্রয়োজন হয় সাধারণত।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হয়। দেরিতে জমা দিলে আবেদন গ্রহণ করা হয় না। সুতরাং, সময়সীমা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবেদনের পর অপেক্ষা করতে হয় পরীক্ষার জন্য।
গার্মেন্টসে চাকরির অভিজ্ঞতা
গার্মেন্টসে চাকরির অভিজ্ঞতা বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য ভিন্ন হয়ে থাকে। নতুন কর্মীদের প্রথমে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লাগে। কাজের পরিবেশ এবং নিয়মকানুনে অভ্যস্ত হতে হয়।
কাজের মাধ্যমে নতুন দক্ষতা অর্জন করা যায়। মেশিন অপারেশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, টিম ম্যানেজমেন্ট শেখা যায়। অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে দায়িত্ব এবং বেতন বাড়ে।
সহকর্মীদের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় কাজে অংশগ্রহণ করতে হয়। নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশ করার সুযোগ পাওয়া যায়। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
গার্মেন্টসে চাকরির ইন্টারভিউ প্রশ্ন
গার্মেন্টসে চাকরির ইন্টারভিউ প্রশ্ন সাধারণত কাজের সাথে সম্পর্কিত হয়। প্রাথমিক প্রশ্নগুলো ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে হয়। নাম, ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
পেশাগত প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে সেলাই মেশিন সম্পর্কে জ্ঞান। কাপড়ের গুণমান চেনার পদ্ধতি জিজ্ঞেস করা হয়। কাজের চাপ সামলানোর ক্ষমতা যাচাই করা হয়।
ব্যবহারিক পরীক্ষাও নেওয়া হয় অনেক ক্ষেত্রে। সেলাই মেশিনে কাজ করে দেখতে বলা হয়। কোয়ালিটি চেক করার দক্ষতা পরীক্ষা করা হয়। সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা দেখা হয়।
গার্মেন্টসে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
গার্মেন্টসে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পত্রিকায় বেশি বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। শুক্র এবং শনিবার সবচেয়ে বেশি চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পদের নাম, যোগ্যতা, বেতন এবং সুবিধা উল্লেখ থাকে। আবেদনের শেষ তারিখ এবং পদ্ধতি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। কোম্পানির ঠিকানা এবং যোগাযোগের তথ্য থাকে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পড়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। ভুয়া বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলতে হয়। সুপরিচিত কোম্পানির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করা নিরাপদ। সন্দেহজনক বিজ্ঞাপন থেকে দূরে থাকা উচিত।
গার্মেন্টসে চাকরির ক্যারিয়ার গাইড
গার্মেন্টসে চাকরির ক্যারিয়ার গাইড অনুসরণ করলে সফলতা পাওয়া সম্ভব। ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রাথমিক পদে যোগ দিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। ধৈর্য ধরে কাজ শিখতে হয় পর্যায়ক্রমে।
দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে হয়। নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশ করতে হয় পদোন্নতির জন্য। কমিউনিকেশন স্কিল এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়াতে হয়। অন্যদের শেখানো এবং গাইড করার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে ক্যারিয়ার গড়তে হয়।
উপসংহার
গার্মেন্টস শিল্পে চাকরির সুযোগ অপরিসীম। উপযুক্ত যোগ্যতা এবং দক্ষতা অর্জন করে এই খাতে সফল ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। গার্মেন্টসে চাকরি পেতে হলে সঠিক তথ্য, প্রস্তুতি এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
এই শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। প্রযুক্তির উন্নতি এবং নতুন বাজার সৃষ্টির ফলে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। নিরন্তর শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন অত্যাবশ্যক।
চ্যালেঞ্জ থাকলেও গার্মেন্টস খাত এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসংস্থানের উৎস। সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই খাতে দীর্ঘমেয়াদি এবং সফল ক্যারিয়ার গড়া যায়। অতএব, আগ্রহী ব্যক্তিরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতে কী কী যোগ্যতা লাগে?
গার্মেন্টসে কাজের জন্য পদভেদে যোগ্যতা আলাদা। অপারেটর পদের জন্য অষ্টম শ্রেণি পাস হলেই চলে। সুপারভাইজার হতে এসএসসি বা এইচএসসি প্রয়োজন। ইঞ্জিনিয়ারিং পদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রি আবশ্যক।
গার্মেন্টসে নতুন কর্মীদের বেতন কত?
নতুন কর্মীদের বেতন সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি অনুসারে শুরু হয়। বর্তমানে ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়ে অভিজ্ঞতার সাথে বৃদ্ধি পায়। ওভারটাইম এবং বোনাস পাওয়া যায় অতিরিক্ত।
গার্মেন্টসে চাকরির জন্য কোথায় আবেদন করব?
দৈনিক পত্রিকার চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করতে পারেন। অনলাইন জব পোর্টালেও বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়। কারখানার গেটেও সরাসরি বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়। বিশ্বস্ত উৎস থেকে তথ্য নেওয়া উচিত।
গার্মেন্টসে মহিলাদের জন্য কাজের সুযোগ কেমন?
মহিলাদের জন্য গার্মেন্টসে প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। সেলাই কাজে মহিলারা বিশেষ দক্ষ। কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং ফিনিশিং বিভাগে মহিলাদের চাহিদা বেশি। নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হয়।
গার্মেন্টসে ক্যারিয়ার গড়তে কত সময় লাগে?
গার্মেন্টসে ক্যারিয়ার গড়তে ৫-১০ বছর সময় লাগতে পারে। তবে, দক্ষতা এবং পরিশ্রমের ভিত্তিতে দ্রুত উন্নতি সম্ভব। নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিলে পদোন্নতি পেতে সুবিধা হয়। ধৈর্য ধরে কাজ করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
গার্মেন্টসে কাজ করতে কি অভিজ্ঞতা লাগে?
প্রবেশ পর্যায়ের কাজের জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। কোম্পানি নিজেই প্রশিক্ষণ দেয়। তবে, উন্নত পদের জন্য অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। অন্য কোম্পানির অভিজ্ঞতা গ্রহণযোগ্য হয়।
গার্মেন্টসে কাজের সময় কেমন?
সাধারণত দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। প্রয়োজনে ওভারটাইম করতে হয় যার জন্য অতিরিক্ত পেমেন্ট পাওয়া যায়। সাপ্তাহিক ছুটি এবং সরকারি ছুটি পাওয়া যায়। কাজের সময় নির্ধারিত এবং নিয়মিত।
গার্মেন্টসে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে কি?
হ্যাঁ, গার্মেন্টসে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নতুন কর্মীদের জন্য বেসিক ট্রেনিং আছে। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এডভান্স ট্রেনিং দেওয়া হয়। বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়।
গার্মেন্টসে চাকরির নিরাপত্তা কেমন?
আধুনিক গার্মেন্টস কারখানায় কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। ফায়ার সেফটি, ইমার্জেন্সি এক্সিট, ফার্স্ট এইড সুবিধা রয়েছে। শ্রম আইন মেনে চলা হয়। তবে, কোম্পানি নির্বাচনে সতর্ক থাকা উচিত।
গার্মেন্টসে চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া যায় কি?
দিনের শিফটে কাজ করলে সন্ধ্যায় বা রাতে পড়াশোনা করা যায়। অনেক কোম্পানি শিক্ষার জন্য সহায়তা প্রদান করে। পার্ট-টাইম কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। তবে, কাজ এবং পড়ার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হয়।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍