গেমিং পিসি এখন আর শুধু বিলাসিতা নয়। আজকের যুগে ভাল গেম খেলতে হলে সঠিক কনফিগারেশনের পিসি দরকার। বাংলাদেশে গেমিং পিসির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন বাজেটে আকর্ষণীয় অপশন রয়েছে।
গেমিং পিসি দাম বাংলাদেশ

বাংলাদেশে গেমিং পিসির দাম বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত তিনটি ক্যাটাগরিতে দাম ভাগ করা যায়।
বেসিক গেমিং পিসির দাম শুরু হয় ৪৫,০০০ টাকা থেকে। এই রেঞ্জে AMD Ryzen 3 বা Intel Core i3 পাবেন। গ্রাফিক্স কার্ড হিসেবে GTX 1650 বা RX 5500 XT ব্যবহার করা হয়।
মিড-রেঞ্জ গেমিং পিসির দাম সাধারণত ৬৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ১,২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়। এসব কনফিগারেশনে সাধারণত Ryzen 5 বা Intel Core i5 প্রসেসর ব্যবহার করা হয়, আর গ্রাফিক্স কার্ড RTX 3060 বা RX 6600 মডেল এর হয়ে থাকে। দাম বাড়ার মূল কারণ হল ডলারের দাম বৃদ্ধি। আমদানি শুল্ক এবং ভ্যাট মিলে মোট দাম অনেক বেড়ে যায়। তবে স্থানীয় এসেম্বলি করলে কিছুটা কম দামে পাওয়া সম্ভব।
সেরা গেমিং পিসি কনফিগারেশন
সেরা গেমিং পিসি কনফিগারেশন নির্ভর করে আপনার প্রয়োজনের উপর। বিভিন্ন বাজেট অনুযায়ী আলাদা কনফিগারেশন রয়েছে।
প্রসেসর হল পিসির মূল হার্ট। গেমিং এর জন্য কমপক্ষে ৪ কোর প্রয়োজন। AMD Ryzen 5 5600X এখনও বেস্ট চয়েস। Intel Core i5-12400F ও ভাল অপশন।
গ্রাফিক্স কার্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 1080p গেমিং এর জন্য RTX 3060 যথেষ্ট। 1440p গেমিং এর জন্য RTX 3070 বা RX 6700 XT প্রয়োজন।
র্যাম কমপক্ষে ১৬ জিবি DDR4 দিতে হবে। ফ্রিকোয়েন্সি ৩২০০ MHz বা তার বেশি হলে ভাল। ডুয়াল চ্যানেল কনফিগারেশন অবশ্যই রাখতে হবে।
মাদারবোর্ড B450 বা B550 চিপসেট ব্যবহার করুন। WiFi এবং ব্লুটুথ সাপোর্ট থাকলে ভাল। কমপক্ষে ৪টি র্যাম স্লট দেখে নিন।
গেমিং পিসির জন্য মিনিমাম ৬৫০W Power Supply ব্যবহার করুন। সিকিউরিটি ও স্থায়িত্বের জন্য 80+ Bronze সার্টিফাইড PSU নির্বাচন করুন।
বাজেট গেমিং পিসি
বাজেট গেমিং পিসি মানে কম টাকায় ভাল পারফরমেন্স। ৫০,০০০ টাকার মধ্যে ভাল একটা গেমিং পিসি বানানো সম্ভব।
AMD Ryzen 5 4500 একটি ভাল বাজেট প্রসেসর। এই প্রসেসরে ৬ কোর ১২ থ্রেড রয়েছে। Intel Core i3-12100F ও ভাল অপশন।
গ্রাফিক্স কার্ড হিসেবে GTX 1650 বা RX 5500 XT ব্যবহার করতে পারেন। এইসব কার্ড দিয়ে মিডিয়াম সেটিং এ ভাল গেম খেলা যায়।
র্যাম ১৬ জিবি দিলেই চলবে। ব্র্যান্ড Corsair বা G.Skill হলে ভাল। স্পিড ৩২০০ MHz রাখার চেষ্টা করুন।
স্টোরেজ হিসেবে ২৫৬ জিবি SSD দিন। অতিরিক্ত গেম রাখার জন্য ১ টিবি HDD যোগ করতে পারেন। SSD তে OS এবং মূল গেম রাখুন।
কেস এবং কুলিং সিস্টেম ভাল হওয়া জরুরি। ডিপকুল ব্র্যান্ডের কুলার ভাল। কেসে কমপক্ষে ৩টি ফ্যান থাকা দরকার।
পাওয়ার সাপ্লাই ৫৫০ ওয়াট হলেই চলবে। থার্মালটেক বা কুলার মাস্টার ব্র্যান্ড বেছে নিন। দাম প্রায় ৪,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা।
হাই পারফরম্যান্স গেমিং পিসি
হাই পারফরম্যান্স গেমিং পিসি মানে সবচেয়ে ভাল গেমিং অভিজ্ঞতা। এইসব পিসিতে 4K গেমিং এবং রে ট্রেসিং সাপোর্ট থাকে।
প্রসেসর হিসেবে Ryzen 7 7700X বা Intel Core i7-13700F ব্যবহার করুন। এইসব প্রসেসরে ৮ কোর ১৬ থ্রেড রয়েছে। গেমিং এর পাশাপাশি স্ট্রিমিং ও করা যায়।
ভাল পারফরম্যান্সের জন্য RTX 4070 Ti বা RX 7800 XT গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করুন। এতে সহজেই 1440p রেজোলিউশনে ১২০ FPS-এর বেশি গেমপ্লে উপভোগ করতে পারবেন।
ফিউচারের জন্য ৩২ জিবি DDR5 RAM ব্যবহার করুন, যার স্পিড মিনিমাম ৫৬০০ MHz বা তার বেশি হতে হবে। আর RGB লাইট থাকলে সিস্টেমটি আরও সুন্দর দেখাবে।
মাদারবোর্ড X670 বা Z790 চিপসেট নিন। PCIe 5.0 সাপোর্ট থাকলে ভবিষ্যতের জন্য ভাল। WiFi 6E এবং USB 3.2 পোর্ট অবশ্যই দেখুন।
স্টোরেজ হিসেবে ১ টিবি NVMe SSD দিন। স্পিড ৭,০০০ MB/s বা তার বেশি হলে ভাল। সামসাং 980 Pro বা WD Black SN850X ভাল অপশন।
কুলিং সিস্টেম AIO লিকুইড কুলার ব্যবহার করুন। ২৮০mm বা ৩৬০mm রেডিয়েটর দিলে ভাল ঠান্ডা থাকবে। Corsair বা NZXT ব্র্যান্ড ভাল।
গেমিং পিসি বিল্ড বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গেমিং পিসি বিল্ড করা এখন অনেক সহজ। ঢাকার মাল্টিপ্ল্যান, এলিফ্যান্ট রোড এবং চট্টগ্রামের কদম মোবাইল মার্কেটে সব কিছু পাওয়া যায়।
প্রথমে আপনার বাজেট ঠিক করুন। তারপর সেই অনুযায়ী কম্পোনেন্ট বেছে নিন। অভিজ্ঞ দোকানদারের পরামর্শ নিলে ভাল হয়।
কম্পোনেন্ট কেনার সময় ওয়ারেন্টি দেখে নিন। প্রতিটি পার্টসের আলাদা ওয়ারেন্টি কার্ড রাখুন। রসিদ সংরক্ষণ করা জরুরি।
এসেম্বলি সার্ভিস বিনামূল্যে দিলে ভাল। তবে নিজে বিল্ড করার চেষ্টা করুন। ইউটিউবে অনেক টিউটরিয়াল রয়েছে।
স্থানীয় দোকান থেকে কিনলে দাম কম পড়ে। অনলাইনে কিনলে বেশি দাম দিতে হয় কিন্তু নিরাপত্তা বেশি। রাইস টেক, স্টার টেক এইসব দোকান ভাল।
বিল্ড করার সময় প্রথমে মাদারবোর্ড কেসে লাগান। তারপর প্রসেসর, র্যাম, স্টোরেজ লাগান। সবশেষে গ্রাফিক্স কার্ড এবং পাওয়ার সাপ্লাই কানেক্ট করুন।
অনলাইন গেমিং পিসি কেনা
অনলাইনে গেমিং পিসি কেনার বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। ঘরে বসে অর্ডার করতে পারেন। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
প্রথমে বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট বেছে নিন। রাইস টেক, স্টার টেক, টেক শপ বিডি এইসব সাইট ভাল। কাস্টমার রিভিউ দেখে নিন।
ডেলিভারি টাইম জেনে নিন। ঢাকার ভিতরে ১-২ দিন লাগে। বাইরে ৩-৫ দিন সময় লাগতে পারে। প্যাকেজিং ভাল হওয়া জরুরি।
রিটার্ন পলিসি পড়ে নিন। কোন পার্টস নষ্ট এলে বদলানোর ব্যবস্থা আছে কি না দেখুন। ওয়ারেন্টি সার্ভিস কেমন তা জানুন।
অনলাইনে কিনলে দাম তুলনা করা সহজ। বিভিন্ন সাইটের দাম দেখে তারপর কিনুন। ডিসকাউন্ট বা অফার থাকলে সেই সুবিধা নিন।
কাস্টম বিল্ড অর্ডার করার সুবিধা আছে। আপনার পছন্দের কনফিগারেশন বলে দিন। তারা বিল্ড করে পাঠাবে।
সস্তা গেমিং পিসি
সস্তা গেমিং পিসি মানে এই না যে পারফরমেন্স খারাপ হবে। সঠিক কম্পোনেন্ট বেছে নিলে কম দামেও ভাল পিসি পাওয়া যায়।
গ্রাফিক্স কার্ড হিসেবে GTX 1060 বা RX 580 দেখতে পারেন। সেকেন্ড হ্যান্ড বাজারে ভাল দামে পাওয়া যায়।
র্যাম ১৬ জিবির বদলে প্রথমে ৮ জিবি কিনুন। পরে আরো একটি ৮ জিবি যোগ করতে পারবেন। এতে প্রাথমিক খরচ কম হবে।
হার্ড ড্রাইভ দিয়ে শুরু করুন। পরে SSD যোগ করা যাবে। তবে OS এর জন্য ছোট একটা ১২৮ জিবি SSD দিলে ভাল।
কেস এবং PSU এ সাশ্রয় করবেন না। ভাল ব্র্যান্ডের কিনুন। এগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।
লোকাল এসেম্বল করলে দাম কম পড়ে। ব্র্যান্ডেড পিসি না কিনে কাস্টম বিল্ড করুন। এতে হাজার খানেক টাকা বাঁচবে।
প্রিমিয়াম গেমিং পিসি
প্রসেসর Intel Core i9-13900K বা AMD Ryzen 9 7900X নিন। এইসব প্রসেসর দিয়ে 4K স্ট্রিমিং ও করা যায়। ওভারক্লকিং সাপোর্ট রয়েছে।
গ্রাফিক্স কার্ড RTX 4080 বা RTX 4090 হলে সবচেয়ে ভাল। এইসব কার্ড দিয়ে 4K গেমিং এবং রে ট্রেসিং চালানো যায়।
র্যাম ৬৪ জিবি পর্যন্ত দিতে পারেন। DDR5-6000 স্পিড রাখুন। RGB র্যাম দেখতে আকর্ষণীয় লাগে।
কুলিং সিস্টেম কাস্টম লুপ করতে পারেন। তবে AIO কুলার যথেষ্ট। ৩৬০mm রেডিয়েটর সহ RGB ফ্যান দিন।
গেমিং পিসি পার্টস দাম
বাংলাদেশে গেমিং পিসি পার্টসের দাম নিয়মিত পরিবর্তন হয়। ডলারের দাম এবং আমদানি শুল্ক প্রভাব ফেলে।
প্রসেসরের দাম Ryzen 5 5600X এর ২২,০০০ টাকা। Intel Core i5-12400F এর ১৮,৫০০ টাকা। হাই-এন্ড প্রসেসর ৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
গ্রাফিক্স কার্ডের দাম সবচেয়ে বেশি। RTX 3060 এর ৪৫,০০০ টাকা। RTX 4070 এর ৮৫,০০০ টাকা। টপ মডেল ২ লাখ টাকা পর্যন্ত।
মাদারবোর্ডের দাম ৮,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। B450 চিপসেট ৮-১২ হাজার। X670 চিপসেট ২৫-৩৫ হাজার টাকা।
র্যামের দাম ১৬ জিবি DDR4 এর ৮,৫০০ টাকা। DDR5 র্যাম আরো দামি। ৩২ জিবি DDR5 এর ২৫,০০০ টাকা।
স্টোরেজের দাম ১ টিবি NVMe SSD এর ১০,০০০ টাকা। ২ টিবি এর ১৮,০০০ টাকা। HDD অনেক সস্তা।
পাওয়ার সাপ্লাইয়ের দাম ৫৫০ ওয়াট এর ৫,৫০০ টাকা। ৮০০ ওয়াট এর ১২,০০০ টাকা। মডুলার PSU বেশি দামি।
কাস্টম গেমিং পিসি
কাস্টম গেমিং পিসি মানে আপনার পছন্দমতো কনফিগারেশন। প্রতিটি কম্পোনেন্ট আপনি নিজে বেছে নিতে পারেন।
কাস্টম বিল্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল নিয়ন্ত্রণ। আপনি ঠিক করতে পারেন কোন ব্র্যান্ডের কোন মডেল চান। বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করা যায়।
প্রথমে আপনার প্রয়োজন ঠিক করুন। শুধু গেমিং নাকি স্ট্রিমিং ও করবেন। কোন রেজোলিউশনে খেলবেন। এইসব বিষয় মাথায় রাখুন।
কম্প্যাটিবিলিটি চেক করা জরুরি। প্রসেসর এবং মাদারবোর্ডের সকেট মিলতে হবে। র্যাম এবং মাদারবোর্ডের সাপোর্ট দেখুন।
ভবিষ্যতের আপগ্রেডের কথা মাথায় রাখুন। ভাল মাদারবোর্ড এবং PSU কিনলে পরে অন্য পার্টস আপগ্রেড করা সহজ।
এসেম্বলি নিজে করার চেষ্টা করুন। প্রথমবার কঠিন লাগলেও পরে সহজ হয়ে যাবে। অনেক টাকা বাঁচবে।
টেস্টিং এবং ট্রাবলশুটিং এর জন্য সময় রাখুন। সব কিছু ঠিকভাবে কাজ করছে কি না চেক করুন।
গেমিং ডেস্কটপ বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গেমিং ডেস্কটপের বাজার বেশ বড়। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড দুটোই পাওয়া যায়।
স্থানীয় ব্র্যান্ড:
- Walton এবং Singer-এর গেমিং ডেস্কটপ পাওয়া যায়।
- দাম তুলনামূলক কম, তবে কনফিগারেশন সীমিত।
- ওয়ারেন্টি ও সার্ভিস ভালো মানের।
বিদেশি ব্র্যান্ড:
- HP Omen, Dell Alienware, ASUS ROG-এর গেমিং ডেস্কটপ।
- দাম বেশি, কিন্তু পারফরম্যান্স ও কোয়ালিটি অনেক ভালো।
- কাস্টম বিল্ড ডেস্কটপ সবচেয়ে জনপ্রিয়। স্থানীয় দোকানে তৈরি করালে দাম কম পড়ে। কনফিগারেশন নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
গেমিং ক্যাফের চাহিদাও বাড়ছে। এইসব জায়গায় ভাল কনফিগারেশনের পিসি রাখা হয়। আগে টেস্ট করে দেখতে পারেন।
অনলাইন গেমিং এর জন্য ইন্টারনেট স্পিড জরুরি। ব্রডব্যান্ড কানেকশন নিন। Ping কম রাখার চেষ্টা করুন।
বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য UPS ব্যবহার করুন। ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার দিলে পিসি নিরাপদ থাকবে।
লেটেস্ট গেমিং পিসি ২০২৫
নতুন প্রসেসর Intel 14th Gen এবং AMD Ryzen 8000 সিরিজ এসেছে। এইসব প্রসেসরে AI এক্সিলেরেশন রয়েছে। গেমিং পারফরমেন্স আরো ভাল।
গ্রাফিক্স কার্ডে নতুন RTX 50 সিরিজ এবং RX 8000 সিরিজ চালু হচ্ছে। VRAM-এর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে 4K গেমিং এখন মানক হিসেবে ধরা হচ্ছে।
NVMe SSD এর স্পিড ১০,০০০ MB/s পর্যন্ত পৌঁছেছে। গেম লোডিং টাইম অনেক কম। Direct Storage টেকনোলজি ব্যবহার হচ্ছে।
RGB লাইটিং এবং কাস্টমাইজেশন আরো উন্নত। ARGB এর পরিবর্তে Digital RGB ব্যবহার হচ্ছে। সফটওয়্যার কন্ট্রোল আরো সহজ।
গেমিং পিসি শপ বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গেমিং পিসি শপের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি দোকান রয়েছে।
ঢাকায় মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার, এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট এলাকায় অনেক দোকান আছে। রাইস টেক, স্টার টেক, টেক ল্যান্ড বিখ্যাত দোকান।
চট্টগ্রামে কদম মোবাইল মার্কেট এবং গুলশান সার্কিট হাউস এলাকায় দোকান পাবেন। আইটি ওয়ার্ল্ড, কম্পিউটার সিটি এইসব দোকান ভাল।
সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এইসব শহরেও গেমিং পিসি শপ আছে। তবে কনফিগারেশনের অপশন কম। দামও একটু বেশি।
অনলাইন শপ এখন বেশ জনপ্রিয়। ওয়েবসাইটে সব কনফিগারেশন দেখা যায়। দাম তুলনা করা সহজ। ডেলিভারি সার্ভিসও ভাল।
দোকান বেছে নেওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় দেখুন। অভিজ্ঞতা কত বছরের। কাস্টমার রিভিউ কেমন। ওয়ারেন্টি সার্ভিস আছে কি না।
ভাল দোকানে টেস্টিং সুবিধা থাকে। কেনার আগে পিসি চালিয়ে দেখতে পারেন। কোন সমস্যা থাকলে সাথে সাথে বলতে পারেন।
অফিস ও গেমিং পিসি কম্বো

অনেকেই অফিস কাজ এবং গেমিং দুটোর জন্যই পিসি চান। এক্ষেত্রে মিড রেঞ্জ কনফিগারেশন ভাল।
প্রসেসর Intel Core i5 বা AMD Ryzen 5 নিন। এইসব প্রসেসরে ইনটিগ্রেটেড গ্রাফিক্স আছে। অফিস কাজের জন্য যথেষ্ট।
র্যাম ১৬ জিবি দিন। অফিস কাজে ৮ জিবি যথেষ্ট কিন্তু গেমিং এর জন্য ১৬ জিবি লাগে। DDR4-3200 স্পিড রাখুন।
স্টোরেজে SSD এবং HDD দুটোই রাখুন। ২৫৬ জিবি SSD তে OS এবং সফটওয়্যার। ১ টিবি HDD তে ডকুমেন্ট এবং গেম।মনিটর ২৪ ইঞ্চি IPS প্যানেল ভাল গেমিং এর জন্য।
কীবোর্ড এবং মাউস মেকানিক্যাল টাইপ নিন। অফিস কাজে টাইপিং আরাম হবে। গেমিং এর জন্যও ভাল রেসপন্স পাবেন।
গেমিং পিসি অ্যাকসেসরিজ
গেমিং পিসির পাশাপাশি কিছু অ্যাকসেসরিজ প্রয়োজন। এইসব জিনিস গেমিং অভিজ্ঞতা আরো ভাল করে।
গেমিং মনিটর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ২৭ ইঞ্চি 1440p মনিটর আদর্শ। ১৪৪Hz রিফ্রেশ রেট এবং 1ms রেসপন্স টাইম থাকা চাই।
গেমিং কীবোর্ড মেকানিক্যাল সুইচ দিয়ে তৈরি। Cherry MX বা Gateron সুইচ ভাল। RGB ব্যাকলাইট থাকলে দেখতে সুন্দর।
গেমিং মাউসে হাই DPI সেন্সর থাকে। ১০,০০০ DPI বা তার বেশি নিন। প্রোগ্রামেবল বাটন এবং RGB লাইট থাকলে ভাল।
হেডসেট বা হেডফোনে সারাউন্ড সাউন্ড সাপোর্ট দেখুন। ৭.১ চ্যানেল অডিও পেলে গেমে পজিশনাল অডিও বুঝবেন। মাইক কোয়ালিটি ভাল হতে হবে।
গেমিং চেয়ার এরগোনমিক ডিজাইনের হওয়া চাই। কোমর এবং ঘাড়ের সাপোর্ট থাকা জরুরি। দীর্ঘসময় গেম খেললে আরাম পাবেন।
মাউস প্যাড বড় সাইজের নিন। স্পিড টাইপ বা কন্ট্রোল টাইপ দেখে বেছে নিন। RGB লাইট থাকলে সেটআপ আকর্ষণীয় দেখায়।
ওয়েবক্যাম এবং স্পিকার স্ট্রিমিং এর জন্য দরকার। ১০৮০p ওয়েবক্যাম এবং ২.১ স্পিকার সিস্টেম নিন।
উপসংহার
গেমিং পিসি কেনা এখন আর জটিল কাজ নয়। সঠিক তথ্য এবং পরিকল্পনা থাকলে ভাল পিসি পাওয়া যায়। বাজেট নির্ধারণ করে তারপর কনফিগারেশন বেছে নিন।
বাংলাদেশে গেমিং পিসির বাজার ক্রমশ বড় হচ্ছে। নতুন টেকনোলজি আসছে। দাম কমছে। গেমিং এর জন্য আলাদা পিসি এখন সাধারণ ব্যাপার।
ভবিষ্যতে গেমিং পিসি আরো উন্নত হবে। AI এবং VR গেমিং বাড়বে। ক্লাউড গেমিং জনপ্রিয় হবে। তবে লোকাল পিসির গুরুত্ব থাকবে।
সবশেষে বলি, অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিন। অনলাইনে রিভিউ পড়ুন। নিজের প্রয়োজন বুঝে কিনুন। ভাল গেমিং অভিজ্ঞতার জন্য সঠিক পিসি জরুরি।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
গেমিং পিসি কিনতে সর্বনিম্ন কত টাকা লাগবে?
বাংলাদেশে একটি বেসিক গেমিং পিসি কিনতে সাধারণত ৪৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা খরচ হবে। এই বাজেটে আপনি Ryzen 3 প্রসেসর এবং GTX 1650 গ্রাফিক্স কার্ড পাবেন।
NVIDIA নাকি AMD — কোন ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স কার্ড বেশি ভালো?
দুটো ব্র্যান্ডই ভাল। NVIDIA এর রে ট্রেসিং এবং DLSS টেকনোলজি ভাল। AMD এর দাম কম এবং VRAM বেশি। বাজেট অনুযায়ী বেছে নিন।
গেমিং পিসিতে কত জিবি র্যাম দরকার?
বর্তমানে ১৬ জিবি র্যাম হলো স্ট্যান্ডার্ড। নতুন গেমগুলো আরও বেশি র্যাম ব্যবহার করে, তাই ফিউচারের জন্য ৩২ জিবি র্যাম ব্যবহার করা উত্তম।
SSD না HDD কোনটা ভাল?
গেমিং এর জন্য SSD অবশ্যই ভাল। গেম লোডিং টাইম অনেক কম। OS এবং প্রিয় গেম SSD তে রাখুন। বাকি ডেটা HDD তে রাখতে পারেন।
প্রি-বিল্ট পিসি নাকি কাস্টম বিল্ড ভাল?
কাস্টম বিল্ড বেশি সুবিধাজনক। নিজের পছন্দমতো কনফিগারেশন করা যায়। দামও কম পড়ে। তবে টেকনিক্যাল জ্ঞান লাগে।
গেমিং পিসির পাওয়ার সাপ্লাই কত ওয়াট হওয়া উচিত?
মিড রেঞ্জ গেমিং পিসির জন্য ৬৫০ ওয়াট যথেষ্ট। হাই এন্ড কনফিগারেশনের জন্য ৮৫০ ওয়াট বা তার বেশি লাগবে।
গেমিং পিসি কেনার পর কি কি সফটওয়্যার ইনস্টল করব?
গেমিং পিসিতে Windows OS, গ্রাফিক্স ড্রাইভার, Steam, Epic Games Store এবং Discord থাকা জরুরি।
গেমিং পিসির আয়ুষ্কাল কত বছর?
ভাল কনফিগারেশনের গেমিং পিসি ৫-৬ বছর চলে। মাঝখানে গ্রাফিক্স কার্ড বা র্যাম আপগ্রেড করলে আরো বেশি দিন চলবে।
অনলাইনে নাকি দোকান থেকে কিনব?
দুটোর নিজস্ব সুবিধা আছে। অনলাইনে দাম কম কিন্তু টেস্ট করা যায় না। দোকানে হাতে ধরে দেখা যায় কিন্তু দাম বেশি।
গেমিং পিসি ঠান্ডা রাখতে কি করব?
ভাল কেস ফ্যান লাগান। CPU কুলার ভাল দিন। কেসের ভিতর তাপমাত্রা ৭৫ ডিগ্রির নিচে রাখুন। নিয়মিত ধুলো পরিষ্কার করুন।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍