আজকাল অনেক মানুষই ওজন নিয়ে চিন্তিত। ব্যস্ত জীবনে জিমে যাওয়ার সময় নেই। কিন্তু জানেন কি, ঘরে বসেই ওজন কমানো সম্ভব? ওজন কমানোর সহজ উপায় রয়েছে অনেক। আজকের এই লেখায় সেই সব উপায় নিয়ে কথা বলব।
ওজন বৃদ্ধি একটি সাধারণ সমস্যা। ভুল খাবার আর কম নড়াচড়া এর মূল কারণ। তবে ছোট ছোট পরিবর্তন বড় ফল দিতে পারে। ধৈর্য আর সঠিক পদ্ধতিই হল মূল চাবিকাঠি।
ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায়

ঘরে বসে ওজন কমানো খুবই সম্ভব। প্রথমেই আপনার দৈনিক রুটিন দেখুন। কতক্ষণ বসে থাকেন? কতটুকু হাঁটেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন।
ঘরের কাজকর্মও ভালো ব্যায়াম। ঝাড়ু দেওয়া, মোছা, বাগান করা সবই কার্যকর। দিনে ৩০ মিনিট ঘরের কাজ করলেই ক্যালরি পোড়ে।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করুন বেশি করে। লিফট ব্যবহার কমান। ফোনে কথা বলার সময় হাঁটুন। এই ছোট অভ্যাসগুলো বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
ডায়েট ছাড়া ওজন কমানোর উপায়
অনেকে মনে করেন ওজন কমাতে কঠোর ডায়েট করতে হয়। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। ডায়েট ছাড়াও ওজন কমানো যায়।
খাবারের সময় নিয়ম করুন। একই সময়ে খাবার খান। দেরি করে খাবেন না। রাতে ঘুমের ২ ঘন্টা আগে খাওয়া বন্ধ করুন।
খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান। তাড়াহুড়ো করবেন না। ২০ মিনিট সময় নিয়ে খান। এতে কম খাবারেই পেট ভরবে।
ছোট প্লেটে খাবার পরিবেশন করুন। বড় প্লেটে কম খাবার দেখতে কম লাগে। তাই বেশি খাওয়ার ইচ্ছা হয়।
ঘুমের সময় বাড়ান। কম ঘুমালে ক্ষুধা বেড়ে যায়। দিনে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমানোর টিপস
প্রকৃতিতে অনেক উপাদান রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এগুলো নিরাপদ আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
গ্রিন টি পান করুন নিয়মিত। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। দিনে ২-ৃ কাপ পান করতে পারেন।
লেবুর রস খান সকালে। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটি হজম শক্তি বাড়ায়। শরীরের টক্সিন বের করে দেয়।
আদা চা খেতে পারেন। আদায় থাকে জিঞ্জেরল। এটি ওজন কমাতে সহায়ক। হজম শক্তিও বাড়ে।
মধু আর দারুচিনির মিশ্রণ কার্যকর। সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। তবে পরিমিত পরিমাণে খাবেন।
দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। স্বাস্থ্যকর উপায়ে ধীরে ধীরে ওজন কমান। সপ্তাহে ১-২ পাউন্ড কমানো নিরাপদ।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান বেশি। ডিম, মাছ, মাংস, ডাল খান। প্রোটিন বেশি ক্যালরি পোড়ায়। ক্ষুধাও কম লাগে।
কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দিন। ভাত, রুটি পরিমিত খান। বদলে শাকসবজি বেশি খান। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান।
চিনি আর মিষ্টি খাওয়া কমান। কোমল পানীয় পরিহার করুন। এতে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে। পানি পান করুন বেশি।
খাবারে লবণ কমান। বেশি লবণ পানি জমিয়ে রাখে। ওজন বেড়ে যায়। প্রাকৃতিক মসলা ব্যবহার করুন।
হাঁটার মাধ্যমে ওজন কমানো
হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। কোনো যন্ত্রের দরকার নেই। যে কোনো সময় করতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য হাঁটা খুবই কার্যকর।
দিনে ১০ হাজার পা হাঁটার চেষ্টা করুন। শুরুতে ৫ হাজার পা দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে বাড়ান। স্মার্টফোনে স্টেপ কাউন্টার ব্যবহার করুন।
দ্রুত হাঁটুন। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু জোরে হাঁটুন। তবে হাঁফিয়ে যাবেন না। স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার মতো গতিতে হাঁটুন।
সকালে হাঁটা সবচেয়ে ভালো। বিকেলেও হাঁটতে পারেন। অফিসে হাঁটার বিরতি নিন। লাঞ্চের পর ১০ মিনিট হাঁটুন।
পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটলে বেশি ক্যালরি পোড়ে। সমতল জায়গায় হাঁটলেও উপকার আছে। নিয়মিত হাঁটাই মূল বিষয়।
ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর উপায়
ব্যায়াম না করেও ওজন কমানো সম্ভব। তবে শরীরচর্চা থাকলে ভালো ফল পাবেন। কিছু কৌশল অবলম্বন করে ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে পারেন।
বেশি করে দাঁড়িয়ে থাকুন। বসে থাকার সময় কমান। টিভি দেখার সময় মাঝে মাঝে উঠে হাঁটুন। দাঁড়িয়ে কাজ করার চেষ্টা করুন।
ঠান্ডা পানি পান করুন। শরীর পানি গরম করতে ক্যালরি খরচ করে। দিনে ২ লিটার পানি পান করুন। খাবারের আগে পানি পান করলে কম খাবার খেতে পারবেন।
স্ট্রেস কমান। দুশ্চিন্তায় ওজন বাড়ে। মেডিটেশন করুন। গভীর শ্বাস নিন। প্রিয় কাজ করে মন ভালো রাখুন।
ভালো ঘুমান। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। একই সময়ে ঘুমাতে যান। ঘুমের ঘরে অন্ধকার রাখুন। ফোন দূরে রাখুন।
স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমানো
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যই প্রধান। দ্রুত ওজন কমানোর নামে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবেন না। ধীরস্থির পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
সুষম খাবার খান। সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রাখুন। শুধু একটি খাবার খেয়ে থাকবেন না। বৈচিত্র্য রাখুন খাদ্য তালিকায়।
পানি পান করুন পর্যাপ্ত। পানিশূন্যতা হলে শরীরে সমস্যা হয়। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। ফলের রসও পান করতে পারেন।
ভিটামিন আর মিনারেলের ঘাটতি হতে দেবেন না। শাকসবজি আর ফল বেশি খান। রঙিন শাকসবজি নির্বাচন করুন।
ধীরে ধীরে জীবনযাত্রা পরিবর্তন করুন। হঠাৎ করে সব পাল্টাবেন না। একটা অভ্যাস তৈরি হলে নতুন অভ্যাস যোগ করুন।
খাবার নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমানো
খাবার নিয়ন্ত্রণ করা মানে খাবার বন্ধ করা নয়। সঠিক পরিমাণে সঠিক খাবার খাওয়া। এটি ওজন কমানোর মূল চাবিকাঠি।
অংশ নিয়ন্ত্রণ করুন। বেশি খাবার না নিয়ে পরিমিত পরিমাণে নিন। প্রয়োজনে আবার নিতে পারেন। তবে একবারে বেশি নেবেন না।
প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। বিস্কুট, চিপস, ফাস্ট ফুড কম খান। ঘরের তৈরি খাবার খান বেশি। তাজা খাবার বেছে নিন।
খাবারের তালিকা তৈরি করুন। কী কী খাবেন পরিকল্পনা করুন। বাজার করার সময় তালিকা মেনে চলুন। বেশি খাবার কিনবেন না।
খাবারের সময় অন্য কিছু করবেন না। টিভি দেখা বা ফোন ব্যবহার বন্ধ করুন। খাবারের উপর মনোযোগ দিন। তাহলে কম খেলেও তৃপ্তি পাবেন।
পানি খেয়ে ওজন কমানো
পানি পান করা ওজন কমানোর সহজ উপায়। পানির কোনো ক্যালরি নেই। তবুও ওজন কমাতে সাহায্য করে। পানি পানের নানা উপকারিতা রয়েছে।
খাবারের আগে পানি পান করুন। এতে পেট ভরে যায়। কম খাবার খেতে পারবেন। খাবারের ২০ মিনিট আগে পানি পান করুন।
সকালে উঠে পানি পান করুন। রাতে শরীর পানিশূন্য হয়ে যায়। সকালের পানি শরীরকে সতেজ করে। হজম শক্তি বাড়ায়।
ঠান্ডা পানি পান করুন মাঝে মাঝে। শরীর পানি গরম করতে ক্যালরি খরচ করে। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়ে। তবে বেশি ঠান্ডা পানি ক্ষতিকর।
মিষ্টি পানীয়ের বদলে পানি পান করুন। কোক, ফান্টা, জুস এগুলোতে চিনি থাকে। পানি পান করলে অনেক ক্যালরি বাঁচবে।
সহজ ব্যায়ামে ওজন কমানো

ওজন কমানোর জন্য কঠিন ব্যায়ামের দরকার নেই। সহজ কিছু ব্যায়াম নিয়মিত করলেই ভালো ফল পাবেন। ঘরে বসেই এই ব্যায়ামগুলো করতে পারবেন।
পুশ আপ করুন। দেওয়ালে ভর করে করতে পারেন। হাঁটুতে ভর করেও করতে পারেন। ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ান। প্রতিদিন ১০টি করে করুন।
প্ল্যাঙ্ক করুন। পেটের মাংসপেশি শক্তিশালী হবে। শুরুতে ৩০ সেকেন্ড করুন। ধীরে ধীরে সময় বাড়ান। সঠিক পদ্ধতি শিখে নিন।
স্কোয়াট করুন। উরুর মাংসপেশির জন্য ভালো ব্যায়াম। চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গিতে করুন। ১৫টি করে ৩ সেট করুন।
স্ট্রেচিং করুন নিয়মিত। শরীরের নমনীয়তা বাড়ে। ব্যায়ামের আগে পরে করুন। আঘাত এড়াতে সাহায্য করে।
ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানো
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমানো নিরাপদ আর কার্যকর। রান্নাঘরেই পাবেন ওজন কমানোর উপাদান। প্রাকৃতিক এই উপায়গুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত।
মেথি বীজ ভিজিয়ে খান। রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে খান। হজম শক্তি বাড়ে। রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
জিরা পানি পান করুন। রাতে জিরা ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি পান করুন। চর্বি কমাতে সাহায্য করে। হজম সমস্যার সমাধান করে।
তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। সকালে খালি পেটে ৫-৬টি পাতা চিবান। রক্ত পরিষ্কার করে। চাপ কমায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কাঁচা রসুন খান। সকালে ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন খান। তবে পেটে সমস্যা হলে বন্ধ করুন। রক্তে কোলেস্টেরল কমায়।
জীবনযাপন পরিবর্তনে ওজন কমানো
জীবনযাপনের পদ্ধতি পাল্টালে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তন বড় ফল দেয়। ধীরে ধীরে এই পরিবর্তনগুলো আনুন।
তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান। রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করুন। রাতে বেশি খাওয়ার প্রবণতা থাকে। সকালে উঠার অভ্যাস করুন। সকালের বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
প্রচুর হাসুন। হাসিও ব্যায়াম। মুড ভালো রাখে। স্ট্রেস কমায়। বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটান। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।
নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন। একই সময়ে খাওয়া দাওয়া করুন। ঘুমের সময়ও ঠিক রাখুন। অনিয়মিত জীবনযাপন ওজন বাড়ায়।
কাজের ফাঁকে বিরতি নিন। অফিসে বসে বসে কাজ না করে মাঝে মাঝে উঠুন। টেবলে পানির বোতল রাখুন। নিয়মিত পানি পান করুন।
ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়
কার্যকর ওজন কমানোর জন্য পরিকল্পিত পদক্ষেপ দরকার। এলোমেলো পদ্ধতি কাজ করে না। বিজ্ঞানসম্মত উপায় অনুসরণ করুন।
নিজের ওজন নিয়মিত মাপুন। সপ্তাহে একবার ওজন নিন। একই সময়ে মাপুন। অগ্রগতি লিখে রাখুন। তাহলে অনুপ্রেরণা পাবেন।
লক্ষ্য স্থির করুন। কতটুকু ওজন কমাবেন ঠিক করুন। অবাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন না। ছোট ছোট লক্ষ্য রাখুন। অর্জন করলে পুরস্কার দিন নিজেকে।
খাবারের ক্যালরি হিসাব করুন। কী খাচ্ছেন লিখে রাখুন। মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। সচেতন হলে কম খাওয়া হয়।
পরিবারের সদস্যদের সাহায্য নিন। একা চেষ্টা করলে কঠিন হয়। সবাই মিলে স্বাস্থ্যকর খাবার খান। একে অপরকে অনুপ্রেরণা দিন।
ওজন কমানোর ডায়েট প্ল্যান
সুষম ডায়েট প্ল্যান ওজন কমানোর চাবিকাঠি। কঠোর ডায়েট নয়, সঠিক খাবার নির্বাচন করুন। পুষ্টির ঘাটতি হতে দেবেন না।
সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না। দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার এটি। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। ডিম, দুধ, ওটস খেতে পারেন।
দুপুরে সবজি বেশি খান। ভাত কম খান। মাছ বা মাংস রাখুন পরিমিত। সালাদ অবশ্যই খাবেন। পানি পান করুন খাবারের আগে।
বিকেলে ফল খান। চা বিস্কুটের বদলে ফল খাবেন। আপেল, কমলা, পেয়ারা ভালো। শুকনো ফল এড়িয়ে চলুন। তাজা ফল বেছে নিন।
রাতে হালকা খাবার খান। বেশি তেল মসলা এড়ান। সবজির স্যুপ খেতে পারেন। ঘুমের আগে দুধ পান করতে পারেন।
ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্য টিপস
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই ওজন নিয়ন্ত্রণের মূল মন্ত্র। শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। ডায়াবেটিস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। হরমোনের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করান। সুস্থ থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ।
ধূমপান ত্যাগ করুন। মদ্যপান কমান। এগুলো ওজন বৃদ্ধির কারণ। স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিন। রোদে বসুন নিয়মিত। সকালের রোদ সবচেয়ে ভালো। হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। মেটাবলিজম বাড়বে।
মানসিক চাপ কমান। যোগ ব্যায়াম করুন। প্রিয় কাজে সময় দিন। বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিন। আনন্দে থাকুন। খুশি মন ওজন কমাতে সাহায্য করে।
উপসংহার
ওজন কমানোর সহজ উপায় অনেক রয়েছে। ধৈর্য আর নিয়মিত চেষ্টাই মূল কথা। রাতারাতি ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না। স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
ঘরে বসে ওজন কমানো সম্ভব। জিমে না গিয়েও ফিট থাকা যায়। খাবার নিয়ন্ত্রণ আর নিয়মিত শরীরচর্চাই যথেষ্ট। জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন।
মনে রাখবেন, ওজন কমানো একদিনের কাজ নয়। এটি জীবনযাত্রার পরিবর্তন। ধীরে ধীরে অভ্যাস পাল্টান। তাহলে দীর্ঘমেয়াদি ফল পাবেন।
সবার শরীরের ধরন আলাদা। তাই একই পদ্ধতি সবার জন্য কাজ নাও করতে পারে। নিজের শরীরের সাথে মানিয়ে নিন। ধৈর্য রাখুন আর নিয়মিত চেষ্টা করুন।
পরিবারের সাথে এই যাত্রায় এগিয়ে চলুন। একসাথে স্বাস্থ্যকর খাবার খান। একসাথে হাঁটতে যান। পারস্পরিক অনুপ্রেরণা সফলতার চাবিকাঠি।
মনে রাখবেন, ওজন কমানো শুধু দেখতে ভালো লাগার জন্য নয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। সুস্থ থাকলে জীবন আরও উপভোগ্য হবে।
এই নিবন্ধে ওজন কমানোর সহজ উপায়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। মনে রাখবেন, প্রতিটি মানুষ আলাদা। আপনার জন্য কোন পদ্ধতি ভালো কাজ করে তা খুঁজে বের করুন। সবচেয়ে গুরুত্वপূর্ণ বিষয় হল ধৈর্য আর নিয়মিত চেষ্টা।
স্বাস্থ্যই সম্পদ। ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকুন। আনন্দময় জীবনযাপন করুন। মনে রাখবেন, ছোট পদক্ষেপে বড় পরিবর্তন সম্ভব। আজ থেকেই শুরু করুন আপনার স্বাস্থ্যকর যাত্রা।
সতর্কবার্তা:
এই নিবন্ধটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। কোনো স্বাস্থ্য পরিকল্পনা শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী(FAQs)
কতদিনে ওজন কমানো সম্ভব?
স্বাস্থ্যকর উপায়ে সপ্তাহে ১-২ পাউন্ড ওজন কমানো নিরাপদ। তাড়াহুড়ো করলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। ধৈর্য রেখে চেষ্টা করুন। ৩-৬ মাসে ভালো ফল দেখতে পাবেন।
ব্যায়াম না করেও কি ওজন কমানো সম্ভব?
হ্যাঁ, খাবার নিয়ন্ত্রণ করেই ওজন কমানো যায়। তবে ব্যায়াম থাকলে ভালো ফল পাবেন। সহজ কিছু কার্যকলাপ যেমন বেশি হাঁটা, সিঁড়ি ব্যবহার করাও কাজ করে।
ওজন কমানোর জন্য কোন খাবার এড়িয়ে চলব?
চিনিযুক্ত পানীয়, ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ান। অতিরিক্ত তেল, লবণ কমিয়ে দিন। সাদা চাল, ময়দার বদলে আটার খাবার বেছে নিন।
দিনে কত গ্লাস পানি পান করব?
দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। গরমের সময় আরও বেশি পানি দরকার। খাবারের আগে পানি পান করলে কম খাবার খেতে পারবেন। পানির পরিমাণ বাড়ান ধীরে ধীরে।
রাতে খাওয়ার পর কত সময় পর ঘুমাব?
খাবারের কমপক্ষে ২ ঘন্টা পর ঘুমাতে যান। হজমে সময় লাগে। তাড়াতাড়ি ঘুমালে হজমে সমস্যা হয়। ওজনও বাড়তে পারে। হালকা হাঁটাহাঁটি করে ঘুমাতে যান।
চিট ডে রাখা যাবে কি?
মাসে একদিন প্রিয় খাবার খেতে পারেন। তবে বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। পরিমিত পরিমাণে খাবেন। পরের দিন আবার নিয়ম মেনে চলুন। নিয়ন্ত্রিত উপায়ে খান।
ওজন কমানোর সময় কি সাপ্লিমেন্ট নেওয়া দরকার?
সুষম খাবার খেলে আলাদা সাপ্লিমেন্টের দরকার নেই। তবে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রাকৃতিক খাবার থেকে পুষ্টি নেওয়া ভালো।
কেন ওজন কমে না?
অনেক কারণে ওজন নাও কমতে পারে। হরমোনের সমস্যা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, বংশগত কারণ থাকতে পারে। অতিরিক্ত চাপ, কম ঘুমও কারণ। ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রোটিন শেক খাওয়া যাবে?
ঘরে তৈরি প্রোটিন শেক খেতে পারেন। দুধ, কলা, বাদাম দিয়ে তৈরি করুন। বাজারের প্রোটিন পাউডার কেনার আগে উপাদান দেখে নিন। প্রাকৃতিক খাবার থেকে প্রোটিন নেওয়া ভালো।
ওজন কমানোর পর কিভাবে বজায় রাখব?
যে অভ্যাসে ওজন কমিয়েছেন সেগুলো বজায় রাখুন। স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া চালিয়ে যান। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ওজন মাপুন নিয়মিত। সামান্য বাড়লেই সচেতন হয়ে যান।
বয়স বাড়লে কি ওজন কমানো কঠিন?
বয়স বাড়লে মেটাবলিজম কমে যায়। তবে অসম্ভব নয়। ধীর প্রক্রিয়ায় ওজন কমাতে হয়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান। হালকা ব্যায়াম করুন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এগোন।
মহিলাদের ওজন কমানো কি পুরুষদের চেয়ে কঠিন?
হরমোনের কারণে মহিলাদের ওজন কমানো একটু কঠিন হতে পারে। বিশেষ করে মেনোপজের পর। তবে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে সফল হওয়া যায়। ধৈর্য রাখুন আর চেষ্টা করুন।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍