আজকাল ড্রোন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ছোট উড়ন্ত যন্ত্র আমাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশেও ড্রোনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই ড্রোন কিনতে চান কিন্তু সঠিক তথ্য পান না।
এই লেখায় আমরা ড্রোন সম্পর্কে সব কিছু জানব। দাম থেকে শুরু করে ব্যবহারের নিয়ম পর্যন্ত। আপনি যদি ড্রোন কিনতে চান তাহলে এই গাইড আপনার কাজে আসবে।
ড্রোন Camera

ড্রোন ক্যামেরা হল একটি বিশেষ ধরনের ক্যামেরা। এটি ড্রোনের সাথে যুক্ত থাকে। আকাশ থেকে ছবি তোলার জন্য এটি ব্যবহার হয়। আজকাল বেশিরভাগ ড্রোনেই ক্যামেরা থাকে।
ড্রোন ক্যামেরার মান অত্যন্ত উন্নত। অনেক মডেলেই HD থেকে শুরু করে 4K পর্যন্ত ভিডিও রেকর্ড করার সুবিধা রয়েছে। কিছু ড্রোনে বিশেষ জিম্বাল সিস্টেম দেওয়া থাকে, যা ক্যামেরাকে স্থির রাখে। এর ফলে ছবি ও ভিডিও স্পষ্ট ও ঝাঁকুনি-মুক্ত হয়।
বাংলাদেশে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে সুন্দর ছবি তোলা যায়। পদ্মা সেতু, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এসব জায়গার ছবি দারুণ আসে। তবে ক্যামেরা যত ভাল হবে ড্রোনের দাম তত বেশি হবে।
Drone দাম বাংলাদেশে
বাংলাদেশে ড্রোনের দাম বিভিন্ন রকম। সবচেয়ে সস্তা ড্রোন ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। আবার দামি ড্রোন ২ লক্ষ টাকার বেশি হতে পারে। দাম নির্ভর করে ড্রোনের ফিচারের উপর।
শিশুদের খেলার ড্রোন ৫-১০ হাজার টাকা। ভাল ক্যামেরা সহ ড্রোন ২০-৫০ হাজার টাকা। পেশাদার ড্রোনের দাম ১ লক্ষ টাকার উপরে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ড্রোন বেছে নিন।
বাংলাদেশের বাজারে প্রধানত চীনা ব্র্যান্ডের ড্রোনই বেশি পাওয়া যায়। এর মধ্যে DJI, Hubsan এবং Syma সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয়।
Drone Review
ড্রোন কেনার আগে রিভিউ দেখা জরুরি। অভিজ্ঞদের মতামত জানলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ইন্টারনেটে অনেক ড্রোন রিভিউ পাবেন। ইউটিউবেও ভিডিও রিভিউ আছে।
• DJI Mini 3: যদিও এই ড্রোনের সাইজ ছোট, কিন্তু এটি ক্ষমতায় শক্তিশালী।উচ্চমানের ক্যামেরা রয়েছে, যা ভ্রমণ ও ক্রিয়েটিভ ফটোগ্রাফির জন্য একদম উপযুক্ত।
• Hubsan H107D+: শিক্ষানবিসদের জন্য দারুণ এক বিকল্প। এর দাম তুলনামূলক কম হলেও গুণগত মান ভালো, তাই বাজেট সেগমেন্টে এটি অনেকের প্রথম পছন্দ হতে পারে।
• Syma X5SW: যারা ড্রোন ওড়ানো শিখতে চান, তাদের জন্য পারফেক্ট চয়েস। এটি একটি বাজেট-ফ্রেন্ডলি ড্রোন এবং WiFi ক্যামেরা সাপোর্ট করে, যা বেসিক লেভেলের ফটোগ্রাফির জন্য উপযোগী।
• DJI Air 2S: প্রফেশনাল ভিডিওগ্রাফি ও ফটোগ্রাফির জন্য উপযুক্ত একটি ড্রোন। যদিও দাম কিছুটা বেশি, তবে যারা উচ্চমানের কাজ করতে চান তাদের জন্য এটি এক প্রিমিয়াম বিকল্প।
• Eachine E58: বাজেট সীমিত থাকলেও ভালো ফিচার চান, তাদের জন্য এই ড্রোন বেশ কার্যকর। নতুনরা অনুশীলনের জন্য সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবেন, তাই এন্ট্রি-লেভেল ব্যবহারকারীদের জন্য এটি চমৎকার একটি পছন্দ হতে পারে।
রিভিউ দেখার সময় ব্যাটারি লাইফ, ক্যামেরা কোয়ালিটি, উড়ানোর সময় এসব বিষয় খেয়াল করুন। অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখুন। তাহলে ভাল ড্রোন কিনতে পারবেন।
ড্রোন কিভাবে Work করে
ড্রোনের কাজ করার পদ্ধতি বেশ সহজ। এতে চারটি প্রপেলার থাকে। এই প্রপেলার ঘুরে ড্রোনকে উড়ায়। ড্রোনের ভিতরে মোটর থাকে। মোটর প্রপেলার ঘোরায়।
ড্রোন উড়ানোর জন্য রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার হয়। কিছু ড্রোন মোবাইল অ্যাপ দিয়েও চালানো যায়। ড্রোনে জাইরোস্কোপ সেন্সর থাকে। এটি ড্রোনকে সোজা রাখে। GPS সিস্টেম থাকলে ড্রোন নিজে নিজে উড়তে পারে।
ব্যাটারি থেকে শক্তি নিয়ে ড্রোন কাজ করে। ব্যাটারি শেষ হলে ড্রোন নামতে হয়। আধুনিক ড্রোনে অনেক সেন্সর থাকে। এতে বাধা এড়ানো, উচ্চতা মাপা এসব কাজ হয়। প্রযুক্তির কারণে ড্রোন এত সহজ হয়েছে।
ড্রোন ব্যবহার (Drone Use)
ড্রোনের ব্যবহার অনেক বিস্তৃত। বিনোদন থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক কাজ পর্যন্ত। বাংলাদেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরো বাড়বে।
ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফিতে ড্রোনের জুড়ি নেই। বিয়ে-শাদি, অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে ড্রোন ব্যবহার হয়। কৃষি কাজেও ড্রোন দরকারি। ফসলের অবস্থা দেখা, কীটনাশক ছিটানো এসব কাজ হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ড্রোন ব্যবহার হয়। বিল্ডিং পাহারা দেওয়া, সীমান্ত পর্যবেক্ষণ এসব কাজে। উদ্ধার কাজেও ড্রোন সহায়ক। দুর্গম এলাকায় পৌঁছানো, ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজা এসব কাজ করে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও ড্রোন ব্যবহার বাড়ছে।
Drone Buying Guide বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ড্রোন কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। প্রথমে আপনার বাজেট ঠিক করুন। তারপর কি কাজে ব্যবহার করবেন তা ভাবুন। এর উপর ভিত্তি করে ড্রোন বেছে নিন।
• বাজেট: কত টাকা খরচ করতে পারবেন তা আগে ঠিক করুন। • উদ্দেশ্য: শখের জন্য না পেশাদার কাজের জন্য বুঝে নিন। • ক্যামেরা: ভাল ছবি চাইলে ভাল ক্যামেরা সহ ড্রোন নিন। • ব্যাটারি লাইফ: কতক্ষণ উড়বে তা গুরুত্বপূর্ণ। • রেঞ্জ: কত দূর পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দেখুন।
নতুনদের জন্য সহজ কন্ট্রোল সিস্টেম জরুরি। দামি ড্রোন কিনলে ওয়ারেন্টি এবং সার্ভিস দেখুন। স্পেয়ার পার্টস পাওয়া যায় কিনা জেনে নিন। অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কিনুন। তাহলে ভুল হবে না।
ড্রোনের ধরন | দাম রেঞ্জ | উপযুক্ততা | ব্যাটারি লাইফ |
খেলনা ড্রোন | ৫-১৫ হাজার | নতুনদের জন্য | ৫-১০ মিনিট |
হবি ড্রোন | ১৫-৫০ হাজার | শখের জন্য | ১৫-২৫ মিনিট |
সেমি প্রো ড্রোন | ৫০-১ লক্ষ | ছোট ব্যবসার জন্য | ২৫-৩০ মিনিট |
প্রফেশনাল ড্রোন | ১ লক্ষ+ | পেশাদার কাজের জন্য | ৩০+ মিনিট |
Best Drone 2025
২০২৫ সালে অনেক নতুন ড্রোন বাজারে এসেছে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ড্রোনও ভাল হচ্ছে। বাংলাদেশে যেসব ড্রোন সবচেয়ে ভাল সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
DJI Mini 4 Pro এ বছরের সেরা ড্রোন। এটি ছোট কিন্তু শক্তিশালী। ক্যামেরার মান চমৎকার। ব্যাটারি লাইফ ৩৪ মিনিট। দাম একটু বেশি কিন্তু মানের তুলনায় ভাল।
Autel EVO Lite+ আরেকটি দারুণ ড্রোন। এতে 6K ক্যামেরা আছে। নিরাপত্তা সিস্টেম চমৎকার। DJI এর বিকল্প হিসেবে ভাল। Skydio 2+ এর AI সিস্টেম অসাধারণ। এটি নিজে নিজে বাধা এড়িয়ে চলে।
বাজেট ড্রোনের মধ্যে Holy Stone HS175D একটি চমৎকার বিকল্প। এটি ২০ হাজার টাকার কম দামে পাওয়া যায়। এছাড়া Potensic T25 নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য উপযুক্ত। এই ধরনের ড্রোন দিয়ে শুরু করলেই ড্রোন ওড়ানোর প্রাথমিক অভিজ্ঞতা সহজে অর্জন করা যায়।
ড্রোন Photography
ড্রোন ফটোগ্রাফি একটি নতুন শিল্প। আকাশ থেকে তোলা ছবি আলাদা মাত্রা দেয়। বাংলাদেশে অনেক সুন্দর জায়গা আছে। এসব জায়গার আকাশি দৃশ্য অপরূপ।
ড্রোন ফটোগ্রাফির জন্য ভাল ক্যামেরা দরকার। কমপক্ষে ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা নিন। জিম্বাল থাকলে ছবি স্থির হয়। RAW ফরম্যাটে ছবি তুলুন। তাহলে এডিটিং সহজ হবে।
• গোল্ডেন আওয়ার: সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় ছবি তুলুন। • কম্পোজিশন: ছবিতে লিডিং লাইন ব্যবহার করুন। • উচ্চতা: বিভিন্ন উচ্চতা থেকে ছবি তুলুন। • আবহাওয়া: পরিষ্কার দিনে ছবি ভাল আসে। • সেটিংস: ম্যানুয়াল সেটিংস ব্যবহার করা শিখুন।
ড্রোন ফটোগ্রাফিতে ধৈর্য দরকার। প্র্যাকটিস করতে থাকুন। ভাল ছবি তুলতে সময় লাগে। অন্যদের কাজ দেখে শিখুন। তাহলে দক্ষতা বাড়বে।
Drone Video Shooting
ড্রোন ভিডিও শুটিং খুবই জনপ্রিয়। এতে প্রোডাক্শন ভ্যালু বেড়ে যায়। বিয়ে, অনুষ্ঠান, বিজ্ঞাপনে ড্রোন ভিডিও ব্যবহার হয়। সিনেমাটিক ইফেক্ট পেতে ড্রোন দরকার।
ভিডিও শুটিংয়ের জন্য 4K রেজোলিউশন ভাল। কমপক্ষে ৩০fps থাকা চাই। জিম্বাল অবশ্যই দরকার। নইলে ভিডিও কাঁপবে। মাইক্রো SD কার্ডের স্পিড ভাল হতে হবে।
ড্রোন ভিডিওতে বিভিন্ন শট ব্যবহার করুন। উপর থেকে নিচে, এক পাশ থেকে আরেক পাশে এসব মুভমেন্ট করুন। ধীরে ধীরে ড্রোন চালান। তাড়াহুড়ো করবেন না। পরিকল্পনা করে ভিডিও তুলুন। তাহলে ভাল ফলাফল পাবেন।
ভিডিও সেটিংস | হবি ড্রোন | সেমি প্রো | প্রফেশনাল |
রেজোলিউশন | 1080p | 4K@30fps | 4K@60fps |
বিট রেট | ২৫ Mbps | ১০০ Mbps | ১৫০+ Mbps |
কালার প্রোফাইল | Standard | D-Log | RAW/ProRes |
জিম্বাল | ২-axis | ৩-axis | ৩-axis Pro |
Drone Technology
ড্রোন প্রযুক্তি দ্রুত এগিয়ে চলেছে। প্রতি বছর নতুন নতুন ফিচার আসছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সেন্সর টেকনোলজি, ব্যাটারি এসব ক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে।
আধুনিক ড্রোনে অনেক সেন্সর থাকে। GPS, গ্লোনাস, কম্পাস, জাইরোস্কোপ এসব। এইসব সেন্সর ড্রোনকে স্থিতিশীল রাখে। অবস্ট্যাকল সেন্সর বাধা এড়াতে সাহায্য করে। ভিশন পজিশনিং সিস্টেম ঘরের ভিতরে উড়তে সাহায্য করে।
AI প্রযুক্তি ড্রোনকে আরও স্মার্ট করেছে। এখন এটি অটোমেটিক ট্র্যাকিং এবং অবজেক্ট ডিটেকশন করতে সক্ষম। ড্রোন নিজে নিজে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ফিচারসহ পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় ড্রোন বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ড্রোন Control System
ড্রোনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বুঝতে হবে। এটি জানলে ড্রোন ভাল চালাতে পারবেন। দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে। নিরাপদে উড়ানো যাবে।
প্রথাগত রিমোট কন্ট্রোলে দুটি স্টিক থাকে। বাম স্টিক থ্রোটল আর ইয়াও নিয়ন্ত্রণ করে। ডান স্টিক পিচ আর রোল নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিটি স্টিকের কাজ শেখা জরুরি।
• থ্রোটল: ড্রোনের উচ্চতা বাড়ানো কমানো • ইয়াও: ড্রোনের মাথা ঘোরানো • পিচ: সামনে পিছনে যাওয়া • রোল: ডানে বামে যাওয়া • জিম্বাল: ক্যামেরার কোণ পরিবর্তন
আধুনিক ড্রোনে মোবাইল অ্যাপ কন্ট্রোল আছে। এতে আরো সুবিধা পাওয়া যায়। অটোমেটিক মোড, ফটো এডিটিং এসব করা যায়। তবে রিমোট কন্ট্রোল শেখা জরুরি। জরুরি মুহূর্তে কাজে লাগবে।
Drone কোথায় কিনবেন
বাংলাদেশে ড্রোন কেনার অনেক জায়গা আছে। অনলাইন এবং অফলাইন দুই জায়গাতেই পাওয়া যায়। নির্ভরযোগ্য দোকান থেকে কিনুন। নইলে সমস্যা হতে পারে।
ঢাকার পুরান ঢাকা, মৌলভীবাজার, ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেটে ড্রোন পাবেন। চট্টগ্রামেও অনেক দোকান আছে। সিলেট, খুলনা, রাজশাহীতেও পাওয়া যায়। তবে ঢাকায় বেশি বৈচিত্র্য পাবেন।
অনলাইনে দারাজ, ইভ্যালি, আজকেরডিল এসব সাইটে ড্রোন পাবেন। ফেসবুকে অনেক পেজ আছে। এসব জায়গা থেকে অর্ডার করতে পারেন। তবে রিভিউ দেখে কিনুন। ভুয়া পণ্য এড়িয়ে চলুন।
ব্র্যান্ডের অথরাইজড ডিলার থেকে কিনুন। তাহলে অরিজিনাল পণ্য পাবেন। ওয়ারেন্টি এবং আফটার সেল সার্ভিস পাবেন। একটু দাম বেশি হলেও নিরাপদ।
Drone Flying Rules বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ড্রোন উড়ানোর নিয়ম আছে। এসব নিয়ম না মানলে আইনগত সমস্যা হতে পারে। তাই নিয়ম জেনে ড্রোন উড়ান। নিরাপত্তার জন্যও এটা জরুরি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ (CAAB) ড্রোনের নিয়ম নির্ধারণ করেছে। ২৫০ গ্রামের বেশি ওজনের ড্রোনের জন্য অনুমতি লাগে। রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। লাইসেন্স নিতে হয়।
• নো-ফ্লাই জোন: বিমানবন্দর, সামরিক এলাকা, সরকারি ভবনের কাছে উড়ানো নিষেধ • উচ্চতা সীমা: ৪০০ ফুটের বেশি উড়ানো যাবে না • দূরত্ব: মানুষ এবং সম্পত্তি থেকে নিরাপদ দূরত্ব রাখুন • সময়: দিনের বেলা উড়ান, রাতে নয় • আবহাওয়া: খারাপ আবহাওয়ায় উড়াবেন না
শখের জন্য ছোট ড্রোন উড়ালে সাধারণত সমস্যা হয় না। তবে বাণিজ্যিক কাজের জন্য অনুমতি লাগবে। আইন মেনে চলুন। তাহলে নিরাপদে ড্রোন উড়াতে পারবেন।
ড্রোন Pros and Cons

প্রতিটি জিনিসের ভাল মন্দ দিক আছে। ড্রোনেরও কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা আছে। কেনার আগে এসব দিক বিবেচনা করুন। তাহলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ড্রোনের সুবিধা:
• অনন্য দৃশ্য: আকাশ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন • ফটোগ্রাফি: পেশাদার মানের ছবি তুলতে পারবেন • বিনোদন: নতুন ধরনের খেলা এবং বিনোদন • ব্যবসা: ড্রোন দিয়ে টাকা আয় করতে পারেন • শেখা: নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারবেন
ড্রোনের অসুবিধা:
• খরচ: ভাল ড্রোন এবং আনুষাঙ্গিক দামি • ব্যাটারি: সীমিত উড়ার সময় • আবহাওয়া নির্ভর: বাতাস এবং বৃষ্টিতে উড়ানো যায় না • আইনি জটিলতা: নিয়ম এবং অনুমতির ঝামেলা • দুর্ঘটনা: ক্র্যাশ হলে মেরামতি বা নতুন কিনতে হয়
সব দিক চিন্তা করে ড্রোন কিনুন। আপনার প্রয়োজন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন।
Drone Market in Bangladesh
বাংলাদেশে ড্রোনের বাজার দ্রুত বাড়ছে। গত কয়েক বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে শুধু শখের জিনিস ছিল। এখন ব্যবসায়িক কাজেও ব্যবহার হচ্ছে।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ড্রোনের প্রতি আগ্রহ বেশি। ফটোগ্রাফার এবং ভিডিওগ্রাফাররা ড্রোন ব্যবহার করছেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো ড্রোন সার্ভিস দিচ্ছে। রিয়েল এস্টেট সেক্টরেও ড্রোনের চাহিদা বাড়ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। বড় খামারিরা ড্রোন কিনছেন। ফসলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কীটনাশক ছিটানো এসব কাজ হচ্ছে। সরকারও কৃষিতে ড্রোন ব্যবহারে উৎসাহ দিচ্ছে।
বাজারে চীনা ব্র্যান্ডের আধিক্য। DJI সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে অন্যান্য ব্র্যান্ডও আসছে। দাম কমার কারণে মধ্যবিত্তরাও ড্রোন কিনতে পারছেন। ভবিষ্যতে আরো প্রসার ঘটবে।
উপসংহার
ড্রোন এখন আর শুধু খেলনা নয়। এটি একটি শক্তিশালী যন্ত্র। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অনেক কিছু করা যায়। বাংলাদেশেও ড্রোনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
ড্রোন কেনার আগে ভালভাবে গবেষণা করুন। আপনার প্রয়োজন এবং বাজেট বুঝে সিদ্ধান্ত নিন। নিয়ম মেনে উড়ান। নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিন।
ড্রোন প্রযুক্তি এগিয়ে চলেছে। নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশেও এই প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হবে। ড্রোন ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ আছে।
সবশেষে বলব, ড্রোন একটি দারুণ প্রযুক্তি। এটি আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলছে। নতুন অভিজ্ঞতা দিচ্ছে। আপনিও এই প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হন। ড্রোনের জগতে আপনাকে স্বাগতম।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তা ড্রোনের দাম কত?
বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তা ড্রোনের দাম ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। এইসব ড্রোন মূলত শিশুদের খেলার জন্য। তবে ১৫-২০ হাজার টাকায় ক্যামেরা সহ ভাল ড্রোন পাওয়া যায়।
ড্রোন উড়ানোর জন্য লাইসেন্স লাগে কি?
২৫০ গ্রামের কম ওজনের ড্রোনের জন্য লাইসেন্স লাগে না। তবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করলে CAAB থেকে অনুমতি নিতে হবে। ভারী ড্রোনের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন।
ড্রোনের ব্যাটারি কতক্ষণ চলে?
ড্রোনের ব্যাটারি লাইফ ৫ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। সস্তা ড্রোনে ৫-১৫ মিনিট। মাঝারি দামের ড্রোনে ২০-৩০ মিনিট। দামি ড্রোনে ৩০-৪০ মিনিট উড়ানো যায়।
ড্রোন ক্র্যাশ হলে মেরামতি করা যায়?
হ্যাঁ, ড্রোন ক্র্যাশ হলে মেরামতি করা যায়। তবে ক্ষতির পরিমাণের উপর নির্ভর করে। ছোটখাট ক্ষতি সহজেই মেরামতি হয়। বড় ক্ষতি হলে খরচ বেশি হতে পারে।
কোন ব্র্যান্ডের ড্রোন সবচেয়ে ভাল?
DJI হল সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য ড্রোন ব্র্যান্ড। তবে Autel, Holy Stone এবং Potensic-ও মানসম্মত বিকল্প হিসেবে বিবেচিত। ড্রোন নির্বাচন করার সময় আপনার বাজেটকে প্রধান হিসেবে বিবেচনা করুন।
ড্রোন দিয়ে কি টাকা আয় করা যায়?
হ্যাঁ, ড্রোন দিয়ে টাকা আয় করা যায়। ইভেন্ট কভারেজ, রিয়েল এস্টেট ফটোগ্রাফি, কৃষি সার্ভিস এসব কাজ করতে পারেন। তবে ভাল দক্ষতা এবং পেশাদার ড্রোন দরকার।
রাতে ড্রোন উড়ানো যায়?
বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী রাতে ড্রোন উড়ানো নিষেধ। তবে বিশেষ অনুমতি নিয়ে উড়ানো যেতে পারে। নিরাপত্তার জন্য দিনের বেলায় উড়ানো ভাল।
ড্রোন কি বৃষ্টিতে উড়ানো যায়?
না, বেশিরভাগ ড্রোনই পানি প্রতিরোধী নয়। বৃষ্টিতে উড়ালে নষ্ট হতে পারে। কিছু বিশেষ ড্রোন আছে যা বৃষ্টিতে উড়ানো যায়। তবে এগুলো খুবই দামি।
ড্রোন কিনলে কি কি আনুষাঙ্গিক লাগে?
অতিরিক্ত ব্যাটারি, প্রপেলার, মাইক্রো SD কার্ড, চার্জার, ক্যারিং কেস এসব লাগতে পারে। কিছু ড্রোনের সাথে এগুলো দেওয়া থাকে। কিছুতে আলাদা কিনতে হয়।
ড্রোন শেখা কি কঠিন?
না, ড্রোন শেখা তেমন কঠিন নয়। আধুনিক ড্রোনে অনেক সাহায্যকারী ফিচার আছে। বেসিক কন্ট্রোল কয়েক দিনেই শেখা যায়। তবে পেশাদার পর্যায়ে যেতে সময় এবং অনুশীলন লাগে।
🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍