কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো – সহজ ও স্টাইলিশ আইডিয়া

আপনার ঘরে সবুজের ছোঁয়া আনতে চান? কিন্তু গাছের যত্ন নেওয়ার সময় নেই? তাহলে কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো আপনার জন্য পারফেক্ট সমাধান। আজকাল অনেকেই নকল গাছ ব্যবহার করে ঘর সুন্দর করছেন। এটি সহজ, সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী। কৃত্রিম গাছের যত্ন নিতে হয় না। পানি দিতে হয় না, রোদের দরকার নেই। শুধু একবার সাজালেই হলো। এই লেখায় আমরা জানবো কীভাবে নকল গাছ দিয়ে ঘর আরও আকর্ষণীয় করা যায়। আপনার বসার ঘর, শোবার ঘর বা অফিস সব জায়গায় কৃত্রিম গাছ মানায়। চলুন দেখি কীভাবে এটি করতে হয়।

👉 এক নজরে প্রবন্ধটির মূল বিষয়বস্তু/সূচিপত্রঃ 📖

কৃত্রিম ফুল দিয়ে ঘর সাজানো

কৃত্রিম ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর আইডিয়া এবং ডেকোরেশন টিপস

কৃত্রিম ফুল দিয়ে ঘর সাজানো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নকল ফুল দেখতে একদম আসলের মতো লাগে। রঙিন ফুল ঘরে প্রাণ এনে দেয়। আপনি টেবিলে, শেলফে বা দেয়ালে ফুলের ডিজাইন বসাতে পারেন। কৃত্রিম ফুল সারা বছর টাটকা থাকে। এতে টাকাও কম খরচ হয়। ফুল মরে যাওয়ার চিন্তা নেই। ছোট ভাসে গোলাপ, লিলি বা অর্কিড রাখুন। ডাইনিং টেবিলে একটি সুন্দর ফুলদানি দারুণ লাগবে। আপনার ঘরে রোমান্টিক ভাব আনতে চাইলে সাদা বা গোলাপি ফুল বেছে নিন। কৃত্রিম ফুল দিয়ে ঘর সাজানো একদম ঝামেলামুক্ত কাজ। আপনি নিজেই সুন্দর করে সাজাতে পারবেন। একটু সৃজনশীলতা থাকলেই যথেষ্ট।

কৃত্রিম গাছপালা দিয়ে ঘর সাজানো

কৃত্রিম গাছপালা দিয়ে ঘর সাজানো এখন ট্রেন্ডে আছে। বড় বড় নকল গাছ ঘরে প্রাকৃতিক অনুভূতি দেয়। কোণায় একটি বড় গাছ রাখলে জায়গাটা ভরে যায়। ছোট গাছ টেবিল বা শেলফে দারুণ দেখায়। গাছপালার সবুজ রং মনকে শান্ত করে। কৃত্রিম গাছপালা একদম আসল গাছের মতো মনে হয়। আপনার ঘরে জঙ্গল থিম করতে চাইলে এটি সেরা অপশন। বাথরুমে ছোট ক্যাকটাস বা সাকুলেন্ট রাখুন। কিচেনে হার্বের নকল গাছ মানিয়ে যায়। আধুনিক বা ট্র্যাডিশনাল যেকোনো ডিজাইনে নকল গাছপালা ব্যবহার হয়। কৃত্রিম গাছপালা দিয়ে ঘর সাজানো সত্যিই একটি স্মার্ট চয়েস। আপনার রুচি অনুযায়ী গাছ বেছে নিন।

ঘর সাজানোর জন্য কোন গাছ ভালো

ঘর সাজানোর জন্য কোন গাছ ভালো তা জানা জরুরি। মানিপ্ল্যান্ট সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি অপশন। এর লতা দেখতে খুব সুন্দর লাগে। বনসাই গাছ দিয়ে মিনিমালিস্ট লুক পাওয়া যায়। পাম ট্রি বড় ঘরের জন্য আদর্শ। ইউক্যালিপটাস গাছ আধুনিক ডিজাইনে মানায়। ফার্ন জাতীয় গাছ ঝুলন্ত ঝুড়িতে রাখা যায়। সাকুলেন্ট ছোট জায়গার জন্য পারফেক্ট। অর্কিড ফুলের গাছ এলিগ্যান্ট লুক দেয়। ব্যাম্বু গাছ ভাগ্য বয়ে আনে বলে মানুষ বিশ্বাস করে। মনস্টেরা গাছ ইনস্টাগ্রামে খুব ট্রেন্ডিং। আপনার ঘরের সাইজ ও স্টাইল দেখে গাছ বেছে নিন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো হলে সব ধরনের গাছই পাওয়া যায়।

  • মানিপ্ল্যান্ট: লতানো গাছ, শেলফে ঝুলিয়ে রাখা যায়
  • বনসাই: ছোট সাইজ, টেবিলের জন্য আদর্শ
  • পাম ট্রি: বড় ঘরের কোণায় রাখার জন্য সুন্দর
  • সাকুলেন্ট: মিনি সাইজ, কম জায়গায় মানায়
  • অর্কিড: সৌন্দর্য বাড়ায়, ফুলসহ পাওয়া যায়

নকল গাছ দিয়ে সাজানো যায় কিভাবে

নকল গাছ দিয়ে সাজানো যায় কিভাবে এই প্রশ্ন অনেকের মনে আসে। প্রথমে ঘরের কোন অংশটি সাজাবেন তা ঠিক করুন। কোণায় বড় গাছ রাখলে ভালো দেখায়। টেবিলে ছোট গাছ সুন্দর লাগে। দেয়ালে ঝুলন্ত গাছের ডিজাইন করতে পারেন। একাধিক গাছ গ্রুপ করে রাখলে দারুণ ইফেক্ট পাওয়া যায়। গাছের পটে সুন্দর ডিজাইন করুন। পাথর, মাটি বা রঙিন পট ব্যবহার করুন। হাইটে ভিন্নতা রাখুন কিছু গাছে। লাইটিং এর সাথে গাছ ম্যাচ করান। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো একটি শিল্প। আপনার পছন্দমতো সাজিয়ে নিন নিজের ঘর।

বসার ঘরে কৃত্রিম গাছ রাখার আইডিয়া

বসার ঘরে কৃত্রিম গাছ রাখার আইডিয়া অনেক রকম আছে। সোফার পাশে একটি বড় পাম ট্রি রাখুন। টিভি ক্যাবিনেটে ছোট গাছ সাজান। কফি টেবিলে একটি সুন্দর প্লান্ট রাখতে পারেন। কর্নারে লম্বা গাছ দারুণ দেখায়। শেলফে বিভিন্ন সাইজের গাছ সাজিয়ে রাখুন। ঝুলন্ত গাছ সিলিং থেকে ঝুলিয়ে দিন। রিডিং নুকে একটি মিনি গাছ বেশ মানায়। ফায়ারপ্লেসের দুই পাশে ম্যাচিং গাছ রাখুন। উইন্ডো সিলে সাকুলেন্টের কালেকশন করুন। এন্ট্রিতে বড় গাছ স্বাগত জানায়। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো বসার ঘরকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

  • সোফার পাশ: বড় পাম বা মনস্টেরা গাছ দারুণ লাগে
  • টিভি ক্যাবিনেট: ছোট সুকুলেন্ট বা ক্যাকটাস রাখুন
  • কফি টেবিল: মিনি বনসাই বা ছোট ফার্ন পারফেক্ট
  • কর্নার: ৫-৬ ফুট লম্বা কৃত্রিম গাছ রাখুন
  • শেলফ: বিভিন্ন সাইজের নকল গাছ সাজিয়ে রাখুন

ঘরের ভেতরে নকল গাছ ব্যবহার

ঘরের ভেতরে নকল গাছ ব্যবহার করা খুবই সুবিধাজনক। আসল গাছের মতো রোদের দরকার নেই। যেকোনো ঘরেই নকল গাছ রাখা যায়। বেডরুমে ছোট গাছ শান্তি দেয়। বাথরুমে ট্রপিক্যাল গাছ মানায়। কিচেনে হার্ব গাছের ডিজাইন সুন্দর। হলওয়েতে লম্বা গাছ স্পেস ভরায়। স্টাডি রুমে ডেস্ক প্ল্যান্ট রাখুন। বারান্দায় বড় পট সাজিয়ে রাখা যায়। স্টেয়ারকেসে গাছের ডিজাইন দারুণ লাগে। ডার্ক কর্নারে সবুজ গাছ লাইফ এনে দেয়। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো মানে ঘরের প্রতিটি অংশে সবুজ ছড়িয়ে দেওয়া। নকল গাছ রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই সুন্দর থাকে।

বাড়িতে কৃত্রিম গাছ তৈরির উপায়

বাড়িতে কৃত্রিম গাছ তৈরির উপায় জানা থাকলে মজার কাজ হবে। প্রথমে প্লাস্টিক বা কাগজের পাতা কিনুন। তার দিয়ে ডাল তৈরি করুন। গ্লু গান দিয়ে পাতা আটকে দিন। কাঠের স্টিক দিয়ে কাণ্ড বানান। রং করে আরও রিয়েলিস্টিক করুন। পটে মাটি বা ফোম রেখে গাছ দাঁড় করান। পাথর দিয়ে উপর সাজিয়ে নিন। এভাবে নিজেই বানাতে পারেন সুন্দর নকল গাছ। ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন। DIY প্রজেক্ট হিসেবে এটি দারুণ। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো আরও মজার হবে যদি নিজে বানান।

উপকরণব্যবহারকোথায় পাবেনদাম (টাকায়)
প্লাস্টিক পাতাগাছের পাতা তৈরিতেস্টেশনারি দোকান৫০-১৫০
তারডাল ও কাণ্ড বানাতেহার্ডওয়্যার দোকান৩০-১০০
গ্লু গানপাতা আটকাতেক্রাফট শপ১৫০-৩০০
রংরিয়েলিস্টিক ইফেক্ট দিতেপেইন্ট শপ৮০-২০০

নকল গাছ কিভাবে সাজাতে হয়

নকল গাছ কিভাবে সাজাতে হয় তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে গাছটি সোজা করে পটে বসান। পাতাগুলো ছড়িয়ে প্রাকৃতিক লুক দিন। কিছু ডাল বাঁকিয়ে ভিন্নতা আনুন। পটে সুন্দর ডেকোরেটিভ পাথর বা মস দিন। হাইট অনুযায়ী জায়গা বেছে নিন। লাইটের দিকে খেয়াল রাখুন গাছ রাখার সময়। ফার্নিচারের সাথে ম্যাচ করে রাখুন। একাধিক গাছ থাকলে গ্রুপিং করুন। কালার কম্বিনেশনে সচেতন থাকুন। রেগুলার ডাস্টিং করে পরিষ্কার রাখুন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো তখনই সফল হয় যখন সঠিকভাবে সাজানো হয়।

  • সোজা করে রাখা: গাছ যেন হেলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন
  • পাতা ছড়ানো: প্রাকৃতিক ভাবে পাতা সাজিয়ে নিন
  • পট ডেকোরেশন: পাথর, মস বা রঙিন পাথর ব্যবহার করুন
  • লোকেশন: ঘরের উপযুক্ত জায়গায় রাখুন
  • পরিষ্কার: নিয়মিত ধুলো ঝেড়ে রাখুন

জলরঙ গাছ দিয়ে সাজানো যায় কি

জলরঙ গাছ দিয়ে সাজানো যায় কি এই প্রশ্ন অনেকেই করেন। আসলে জলরঙ গাছ বলতে কিছু নেই। আপনি হয়তো জলজ গাছের কথা বলছেন। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলজ কৃত্রিম গাছ রাখা যায়। এগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগে। মাছের জন্যও ভালো পরিবেশ তৈরি হয়। টেবিল টপে ওয়াটার প্ল্যান্ট সাজানো যায়। গ্লাস ভাসে নকল জলজ গাছ রাখলে আকর্ষণীয় দেখায়। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো যেকোনো স্টাইলেই সম্ভব। আধুনিক ডিজাইনে ওয়াটার ফিচার জনপ্রিয়। জলের সাথে নকল গাছ মিলিয়ে সাজান। ইউনিক ডিজাইন পাবেন নিশ্চিত।

কৃত্রিম গাছ কি স্টাইলিশ দেখায়

কৃত্রিম গাছ কি স্টাইলিশ দেখায় এটি নির্ভর করে কীভাবে সাজাচ্ছেন তার উপর। ভালো কোয়ালিটির নকল গাছ একদম আসলের মতো দেখায়। মডার্ন ডিজাইনে কৃত্রিম গাছ খুবই ট্রেন্ডি। ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা এখন নকল গাছ ব্যবহার করেন। সঠিক পট ও প্লেসমেন্টে দারুণ লাগে। মিনিমালিস্ট লুকে কৃত্রিম গাছ পারফেক্ট। আর্টিফিশিয়াল গাছের সাথে লাইটিং মিলিয়ে নিন। ভিন্টেজ থেকে মডার্ন সব স্টাইলে মানায়। হাই-এন্ড রেস্তোরাঁ ও হোটেলে দেখবেন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো অবশ্যই স্টাইলিশ হতে পারে। শুধু সঠিক সিলেকশন দরকার।

নকল গাছের দাম বাংলাদেশে

নকল গাছের দাম বাংলাদেশে খুবই সাশ্রয়ী। ছোট টেবিল প্ল্যান্ট পাবেন ১০০-৩০০ টাকায়। মিডিয়াম সাইজ গাছ ৫০০-১৫০০ টাকা। বড় ৫-৬ ফুট গাছ ২০০০-৫০০০ টাকায় পাওয়া যায়। হাই কোয়ালিটি ইমপোর্টেড গাছ ৫০০০-১৫০০০ টাকা। ফুলদানি সহ সেট ৮০০-২৫০০ টাকা। অনলাইনে বেশি অপশন পাবেন। নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটিতে পাওয়া যায়। হাতে বানানো গাছ একটু বেশি দামে। ডিসকাউন্টের সময় কিনলে সস্তায় পাবেন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো বাজেট ফ্রেন্ডলি। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী কিনতে পারবেন।

গাছের ধরনসাইজদাম (টাকা)কোথায় কিনবেন
ছোট সাকুলেন্ট৬-১০ ইঞ্চি১০০-৩০০অনলাইন/মার্কেট
মিডিয়াম প্ল্যান্ট২-৩ ফুট৫০০-১৫০০বসুন্ধরা সিটি
লার্জ ট্রি৫-৬ ফুট২০০০-৫০০০নিউমার্কেট
প্রিমিয়াম ইমপোর্টযেকোনো সাইজ৫০০০-১৫০০০অনলাইন শপ

কৃত্রিম গাছের যত্ন নেওয়ার নিয়ম

কৃত্রিম গাছের যত্ন নেওয়ার নিয়ম খুবই সহজ। নিয়মিত ঝাড়া দিয়ে ধুলো পরিষ্কার করুন। মাসে একবার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন। রোদে রাখবেন না, রং নষ্ট হবে। পাতা বাঁকা হলে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে সোজা করুন। পট পরিষ্কার রাখুন নিয়মিত। পোকামাকড় থেকে দূরে রাখুন। স্টোর করার সময় সাবধানে প্যাক করুন। ভারী কিছু উপরে রাখবেন না। সঠিক যত্নে বছরের পর বছর ভালো থাকবে। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো তখনই দীর্ঘস্থায়ী হয় যখন ভালো কেয়ার নেওয়া হয়।

  • ধুলো পরিষ্কার: সপ্তাহে একবার ঝাড়া দিন
  • মাসিক পরিষ্কার: পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন
  • রোদ এড়ানো: সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন
  • সাবধানে হ্যান্ডল: পাতা যেন না ভাঙে সেদিকে সতর্ক থাকুন
  • স্টোরেজ: ব্যবহার না করলে পলিথিনে মুড়ে রাখুন

৫ ফুট নকল গাছের সাইজ ও দাম

৫ ফুট নকল গাছের সাইজ ও দাম জানা দরকার কেনার আগে। এই সাইজ বেশিরভাগ ঘরের জন্য পারফেক্ট। লিভিং রুমের কর্নারে মানায়। অফিসের রিসেপশনে ভালো দেখায়। ৫ ফুট পাম ট্রি ২৫০০-৪০০০ টাকা। মনস্টেরা গাছ ৩০০০-৫০০০ টাকা। বনসাই স্টাইল ২০০০-৩৫০০ টাকা। ফিকাস ট্রি ২৮০০-৪৫০০ টাকা। বাঁশ গাছ ২২০০-৩৮০০ টাকা। কোয়ালিটি ভালো হলে দাম বাড়ে। পটসহ কিনলে ৫০০-১০০০ টাকা বেশি। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো জন্য ৫ ফুট সাইজ আদর্শ।

৬ ফুট কৃত্রিম গাছের ডেকর আইডিয়া

৬ ফুট কৃত্রিম গাছের ডেকর আইডিয়া দিয়ে ঘর আকর্ষণীয় করুন। এই সাইজ স্টেটমেন্ট পিস হিসেবে কাজ করে। লিভিং রুমের খালি কর্নারে রাখুন। টিভির দুই পাশে ম্যাচিং গাছ সুন্দর লাগে। লম্বা সিলিং থাকলে এই সাইজ পারফেক্ট। অফিসের এন্ট্রিতে স্বাগত জানায়। রেস্তোরাঁর ডিভাইডার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বারান্দায় দুটি পাশে রাখুন। স্টেয়ারকেসের নিচে দারুণ দেখায়। হোটেল লবিতে এলিগ্যান্ট লুক দেয়। ডাবল হাইট সিলিং ঘরে মানায়। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো ৬ ফুট গাছ দিয়ে গ্র্যান্ড হয়।

গাছের নামহাইটদাম (টাকা)উপযুক্ত স্থান
পাম ট্রি৬ ফুট৩৫০০-৬০০০লিভিং রুম কর্নার
ফিকাস৬ ফুট৪০০০-৬৫০০অফিস এন্ট্রি
মনস্টেরা৬ ফুট৪৫০০-৭০০০মডার্ন ঘর
ব্যাম্বু৬ ফুট৩২০০-৫৫০০বারান্দা/টেরেস

নকল গাছ দিয়ে ব্যালকনি সাজানো

নকল গাছ দিয়ে ব্যালকনি সাজানো খুবই জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড। ব্যালকনিতে প্রকৃতির ছোঁয়া আনতে পারেন সহজেই। বিভিন্ন সাইজের পট সাজিয়ে রাখুন। কর্নারে বড় গাছ রাখলে ভালো দেখায়। রেলিংয়ে ঝুলন্ত গাছ লাগান। ছোট টেবিলে মিনি প্ল্যান্ট রাখুন। দেয়ালে ভার্টিকাল গার্ডেন তৈরি করুন। ফ্লোরে কয়েকটি পট সাজিয়ে রাখা যায়। সিটিং এরিয়ার পাশে সবুজ গাছ শান্তি দেয়। সকালের চায়ের সাথে সবুজ দৃশ্য উপভোগ করুন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো ব্যালকনিতেও সম্ভব। আপনার ছোট্ট পরিসর হোক বা বড়।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে অফিস সাজানো

কৃত্রিম গাছ দিয়ে অফিস সাজানো একটি প্রফেশনাল লুক দেয়। ডেস্কে ছোট প্ল্যান্ট রাখলে মন ভালো থাকে। রিসেপশনে বড় গাছ স্বাগত জানায়। কনফারেন্স রুমে কর্নার প্ল্যান্ট দারুণ লাগে। কেবিনের শেলফে সবুজ গাছ চোখ জুড়ায়। ওয়েটিং এরিয়ায় নকল গাছ পরিবেশ সুন্দর করে। ব্রেক রুমে হার্ব গাছের ডিজাইন মানায়। ওপেন স্পেসে ডিভাইডার হিসেবে ব্যবহার করুন। উইন্ডো সিলে লাইন করে রাখুন। কর্মীদের প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে সবুজ দেখলে। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো অফিসেও জনপ্রিয়। ক্লায়েন্টরাও ভালো ইমপ্রেশন পায়।

  • ডেস্ক প্ল্যান্ট: ছোট সাকুলেন্ট বা ক্যাকটাস রাখুন
  • রিসেপশন: ৫-৬ ফুট লম্বা গাছ রাখুন
  • কনফারেন্স রুম: দুই কর্নারে ম্যাচিং গাছ সুন্দর
  • ওয়েটিং এরিয়া: মাঝারি সাইজের গাছ পট সাজিয়ে রাখুন
  • ব্রেক রুম: হার্ব বা ফ্লাওয়ার প্ল্যান্ট উপযুক্ত

কৃত্রিম গাছের বিভিন্ন ধরন

কৃত্রিম গাছের বিভিন্ন ধরন পাওয়া যায় বাজারে। ইনডোর প্ল্যান্টের নকল ভার্সন খুবই জনপ্রিয়। পাম ট্রি, মনস্টেরা, ফিকাস, ফার্ন পাবেন। ফুলের গাছ যেমন গোলাপ, লিলি, অর্কিড আছে। সাকুলেন্ট ও ক্যাকটাসের কালেকশন বিশাল। হার্ব গাছ যেমন বেসিল, রোজমেরি পাওয়া যায়। ঝুলন্ত প্ল্যান্ট যেমন মানিপ্ল্যান্ট, পথোস আছে। বনসাই স্টাইল গাছ মিনিমালিস্টদের পছন্দ। ব্যাম্বু গাছ ভাগ্যের জন্য রাখা হয়। ট্রপিক্যাল গাছ যেমন বার্ড অফ প্যারাডাইজ পাবেন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো যেকোনো স্টাইলেই সম্ভব। আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিন।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে আধুনিক হোম ডেকর

কৃত্রিম গাছ দিয়ে আধুনিক হোম ডেকর করা এখন খুবই ট্রেন্ডি। মিনিমালিস্ট ডিজাইনে সবুজ গাছ কনট্রাস্ট দেয়। মনোক্রোম রুমে রঙিন ফুলের গাছ দারুণ লাগে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্টাইলে বড় পাম ট্রি মানায়। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ডিজাইনে সাদা পটে গাছ পারফেক্ট। বোহেমিয়ান স্টাইলে অনেক গাছ ক্লাস্টার করুন। মিড-সেঞ্চুরি মডার্নে ফিডেল লিফ ফিগ মানায়। কনটেম্পরারি ডিজাইনে জ্যামিতিক পট ব্যবহার করুন। ওপেন কনসেপ্টে গাছ দিয়ে জোনিং করা যায়। হাই-টেক রুমে মেটালিক পটে গাছ সুন্দর। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো মডার্ন লাইফস্টাইলের অংশ।

ডিজাইন স্টাইলউপযুক্ত গাছপটের ধরনপ্লেসমেন্ট
মিনিমালিস্টসাকুলেন্ট, বনসাইসিম্পল হোয়াইটডেস্ক, শেলফ
ইন্ডাস্ট্রিয়ালপাম, মনস্টেরামেটাল, কংক্রিটকর্নার, ফ্লোর
বোহেমিয়ানফার্ন, ঝুলন্ত গাছম্যাক্রেম, বাস্কেটসিলিং, শেলফ
স্ক্যান্ডিনেভিয়ানছোট ট্রি, হার্বসাদা সিরামিকউইন্ডো, টেবিল

ইন্টেরিয়র ডিজাইনে নকল গাছের ব্যবহার

ইন্টেরিয়র ডিজাইনে নকল গাছ ব্যবহার করে ঘর সাজানোর আইডিয়া

ইন্টেরিয়র ডিজাইনে নকল গাছের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। প্রফেশনাল ডিজাইনাররা কৃত্রিম গাছ পছন্দ করেন। মেইনটেনেন্স ফ্রি হওয়ায় ক্লায়েন্টরা খুশি থাকেন। ডার্ক কর্নার উজ্জ্বল করতে সবুজ গাছ দারুণ কাজ করে। স্পেস ডিফাইন করতে গাছ দিয়ে জোনিং করা হয়। ভার্টিকাল গার্ডেন ট্রেন্ডে আছে এখন। দেয়ালে সবুজের ছোঁয়া দিতে নকল গাছ ব্যবহার হয়। থিম্যাটিক ডিজাইনে গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিka রাখে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, অফিসে বেশি দেখা যায়। রেসিডেন্সিয়াল প্রজেক্টেও জনপ্রিয়। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো ইন্টেরিয়র ডিজাইনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে সুন্দর লিভিং রুম সাজানো

কৃত্রিম গাছ দিয়ে সুন্দর লিভিং রুম সাজানো খুব সহজ। প্রথমে রুমের লেআউট দেখে নিন। কোথায় গাছ মানাবে তা বুঝুন। সোফা সেটের পাশে বড় গাছ স্টেটমেন্ট পিস। কফি টেবিলে সেন্টারপিস হিসেবে ছোট গাছ রাখুন। টিভি ইউনিটে সিমেট্রিক্যাল গাছের সাজ দারুণ। শেলফে বিভিন্ন সাইজের গাছ সাজিয়ে রাখুন। উইন্ডোতে সানলাইট ফেক করে গাছ রাখা যায়। সিলিং থেকে ঝুলন্ত প্ল্যান্ট হ্যাং করুন। ফায়ারপ্লেসের মান্টেলে ছোট পট সাজান। কর্নার স্পেস ভরাতে লম্বা গাছ পারফেক্ট। রিডিং নুকে একটি শান্ত প্ল্যান্ট রাখুন। কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো লিভিং রুমকে জীবন্ত করে তোলে।

  • সোফার পাশ: ৫-৬ ফুট পাম বা ফিকাস ট্রি
  • কফি টেবিল: ছোট সাকুলেন্ট বা বনসাই
  • টিভি ইউনিট: দুই পাশে একই সাইজের গাছ
  • শেলফ: মাল্টি-লেভেল গাছের সাজ
  • কর্নার: লম্বা পাম বা মনস্টেরা

উপসংহার

কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো এখন আর নতুন কিছু নয়। এটি একটি স্মার্ট এবং স্টাইলিশ সমাধান। আপনার ব্যস্ত জীবনে গাছের যত্নের সময় না থাকলেও সমস্যা নেই। নকল গাছ দিয়ে ঘরে সবুজের ছোঁয়া আনা সম্ভব। এটি সাশ্রয়ী, দীর্ঘস্থায়ী এবং রক্ষণাবেক্ষণহীন। বসার ঘর থেকে শুরু করে অফিস সব জায়গায় মানায়। বিভিন্ন সাইজ, ডিজাইন এবং দামের গাছ পাওয়া যায়। আপনার পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। সঠিক প্লেসমেন্ট এবং স্টাইলিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পরিষ্কার করলে বছরের পর বছর টিকে থাকবে। আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনে কৃত্রিম গাছ একটি মাস্ট-হ্যাভ আইটেম। আপনিও আজই শুরু করুন আপনার ঘর সাজাতে। নকল গাছের সৌন্দর্য উপভোগ করুন প্রতিদিন।


শেষ কথা: কৃত্রিম গাছ দিয়ে ঘর সাজানো আধুনিক জীবনযাত্রার একটি স্মার্ট পছন্দ। আপনার ঘর, অফিস বা যেকোনো স্থানকে সুন্দর করতে এটি ব্যবহার করুন। সঠিক সিলেকশন এবং প্লেসমেন্টই সফলতার চাবিকাঠি

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

কৃত্রিম গাছ কি আসল গাছের মতো দেখায়?

হ্যাঁ, আজকাল ভালো কোয়ালিটির কৃত্রিম গাছ একদম আসল গাছের মতো দেখায়। উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়ায় পাতা, রং, টেক্সচার সব রিয়েলিস্টিক হয়। কাছ থেকে দেখলেও পার্থক্য বোঝা কঠিন।

কৃত্রিম গাছ কত দিন টিকে থাকে?

সঠিক যত্ন নিলে কৃত্রিম গাছ ৫-১০ বছর টিকে থাকে। কিছু হাই-কোয়ালিটি গাছ আরও বেশি দিন ভালো থাকে। নিয়মিত পরিষ্কার এবং সাবধানে হ্যান্ডল করলে লম্বা সময় চলে।

কৃত্রিম গাছের দাম কেমন?

কৃত্রিম গাছের দাম সাইজ ও কোয়ালিটি অনুযায়ী ভিন্ন হয়। ছোট গাছ ১০০-৩০০ টাকায় পাওয়া যায়। মাঝারি সাইজ ৫০০-১৫০০ টাকা এবং বড় গাছ ২০০০-৫০০০ টাকা। প্রিমিয়াম কোয়ালিটি গাছ আরও বেশি দামে পাওয়া যায়।

কোথায় কৃত্রিম গাছ কিনতে পাবো?

বাংলাদেশে নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কে পাবেন। অনলাইনে দারাজ, এভালি, আজকের ডিল থেকে কিনতে পারেন। ফেসবুক পেজগুলোতেও অনেক অপশন আছে।

কৃত্রিম গাছ কি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?

কৃত্রিম গাছ প্লাস্টিক বা সিল্ক থেকে তৈরি হয়। এগুলো বায়োডিগ্রেডেবল নয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় বারবার কিনতে হয় না। আসল গাছের বিকল্প নয়, কিন্তু সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভালো।

কৃত্রিম গাছের যত্ন কীভাবে নিতে হয়?

নিয়মিত ঝাড়া দিয়ে ধুলো পরিষ্কার করুন। মাসে একবার পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। সরাসরি রোদে রাখবেন না। সাবধানে হ্যান্ডল করুন যাতে পাতা না ভাঙে।

বেডরুমে কি কৃত্রিম গাছ রাখা যায়?

অবশ্যই। বেডরুমে কৃত্রিম গাছ রাখলে কোনো সমস্যা নেই। এটি ক্ষতিকর গ্যাস ছাড়ে না। বরং ঘরে সৌন্দর্য বাড়ায় এবং মন শান্ত করে। ছোট সাইজের গাছ বেডসাইড টেবিলে রাখা যায়।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে কি অফিস সাজানো যায়?

হ্যাঁ, অফিসে কৃত্রিম গাছ দিয়ে সাজানো খুবই জনপ্রিয়। এটি প্রফেশনাল লুক দেয় এবং পরিবেশ সুন্দর করে। ডেস্কে ছোট প্ল্যান্ট এবং রিসেপশনে বড় গাছ রাখা হয়।

নকল গাছ কি ভাড়া পাওয়া যায়?

কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নকল গাছ ভাড়া দেয়। বিয়ে, পার্টি বা কর্পোরেট ইভেন্টের জন্য ভাড়া নিতে পারেন। এটি সাশ্রয়ী অপশন যদি সাময়িক সাজানোর প্রয়োজন হয়।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে ব্যালকনি সাজানো কি সম্ভব?

অবশ্যই সম্ভব। ব্যালকনিতে বিভিন্ন সাইজের কৃত্রিম গাছ রেখে সুন্দর করা যায়। রেলিংয়ে ঝুলন্ত গাছ এবং ফ্লোরে পট সাজিয়ে রাখুন। এটি আউটডোর স্পেসকে জীবন্ত করে তোলে।

কৃত্রিম গাছ কি সূর্যের আলোয় নষ্ট হয়?

হ্যাঁ, দীর্ঘসময় সরাসরি সূর্যের আলোতে রাখলে রং ফিকে হতে পারে। বিশেষ করে সস্তা কোয়ালিটির গাছ দ্রুত নষ্ট হয়। UV প্রোটেকটেড গাছ কিনলে এই সমস্যা কম হয়।

নিজে কি কৃত্রিম গাছ বানানো যায়?

হ্যাঁ, DIY প্রজেক্ট হিসেবে নিজে বানানো সম্ভব। প্লাস্টিক পাতা, তার, গ্লু গান ব্যবহার করে বানাতে পারেন। ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন। এটি মজার এবং সাশ্রয়ী।

কৃত্রিম গাছ কি অ্যালার্জি করে?

না, সাধারণত কৃত্রিম গাছ থেকে অ্যালার্জি হয় না। আসল গাছের পরাগরেণু বা মাটির কারণে যাদের অ্যালার্জি তাদের জন্য নকল গাছ নিরাপদ। তবে ধুলো জমলে সমস্যা হতে পারে তাই পরিষ্কার রাখুন।

কৃত্রিম গাছের সাথে কী ধরনের পট ভালো মানায়?

সিরামিক, টেরাকোটা, মেটাল, কংক্রিট সব ধরনের পট মানায়। আধুনিক ডিজাইনে মিনিমাল পট ভালো লাগে। ট্র্যাডিশনাল ঘরে টেরাকোটা পট সুন্দর। রঙের ম্যাচিং খেয়াল রাখুন।

কৃত্রিম গাছ দিয়ে ওয়েডিং ডেকোর করা যায় কি?

অবশ্যই। অনেক ওয়েডিং প্ল্যানার কৃত্রিম ফুল ও গাছ ব্যবহার করেন। এটি সাশ্রয়ী এবং আগে থেকে প্রস্তুত রাখা যায়। ডেকোরেশন দীর্ঘসময় তাজা থাকে। পরে রি-ইউজ করা যায়।

🔥 পোস্টটি শেয়ার করুনঃ 🌍

Scroll to Top